দিনমজুরের কাজ আটকে অ‍্যাথলিট পল্লবকে অনুশীলনে ফেরাল ‘সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন’

0

ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন, বালুরঘাট : আর্থিক অভাব চরমে। সংসার বাঁচাতে কখনও খেতে কাজ করছেন, কখনও রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করছেন বাংলার প্রতিভাবান আ‍্যাথলিট পল্লব মালো। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের গোপাল বাটি-৯ গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতগোপাল গ্রামের ছেলে পল্লব মালো।

২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ রাজ‍্য অ‍্যাথলেটিক্স মিটে ৮০০ মিটার দৌড়ে ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড সময় করে রেকর্ড করে নজরে আসেন মালো। তারপরেই তিনি ডাক পান জাতীয় শিবিরে। সুযোগ পেয়ে ভুবনেশ্বরে দুই মাস জাতীয় শিবির করেন অখ‍্যাত গ্রামের পল্লব মালো। পরে জলপাইগুড়ি সাই হোস্টেলে ফিরে আসেন। কিন্তু করোনার কারণে সাইয়ের হোস্টেল বন্ধ। ফিরে যেতে হয়েছে নিজের গ্রাম জোতগোপালে।

পল্লবের বাবা প্রদীপ মালো দিনমজুরের কাজ করেন। বাড়িতে পাঁচ জনের সংসার। দুবেলার খাবার জোগাড় করতে পল্লব কখনও রাজমিস্ত্রির সহকারী বা খেতে কাজ করা শুরু করেছেন। “রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করলে দিনে ২০০ টাকা পাই। আর খেতে কাজ করলে ২৫০ টাকা। সব দিন কাজ পাচ্ছি না। যেদিন কাজে যাই সেদিন প্র‍্যাকটিস করতে পারি না।” জানিয়েছেন পল্লব মালো।

বাংলার এই উদীয়মান অ‍্যাথলিটের আর্ধিক অনটনের খবর পৌঁছয় “সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন” (বালুরঘাট শাখা)-এর কাছে। প্রসঙ্গত, ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি তাঁর নিজের নামেই একটা ফাউন্ডেশন করেছেন। শহর কলকাতা ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় সেবা মূলক কাজ করছে এই “সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন।” বালুরঘাটে এই ফাউন্ডেশনের মূল দায়িত্বে আছেন গৌতম গোস্বামী ও শিবেন লাহা। প্রথমজন দক্ষিণ দিনাজপুর ক্রীড়া সংস্থার প্রাক্তন সচিব ও সিএবির বর্তমান অ‍্যাপেক্স কাউন্সিল কমিটির সদস‍্য। আর দ্বিতীয়জন হলেন প্রাক্তন গোলরক্ষক। শিবেন লাহা একটা সময় কলকাতা লিগে চুটিয়ে খেলেছেন। এদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে আছেন বালুরঘাটের বেশ কিছু ব‍্যক্তিত্ব, যারা সবাই “সৌরভ ফাউন্ডেশনের হয়ে কাছ করছেন।

ইতিমধ‍্যে অ‍্যাথলিট পল্লবের বাড়ি গিয়ে দেখা করে এসেছেন “সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন”-এর প্রতিনিধিরা। পল্লবকে জানিয়ে দেওয়া হয়,তার পরিবারের সংসার খরচ আপাতত সৌরভ ফাউন্ডেশন বহন করবে। সংসারের নিত‍্য প্রয়োজনীয় সামগ্রি জোগানের পাশাপাশি পল্লবের ক্রীড়া সরঞ্জামও দেওয়া হচ্ছে। এখন আর দিনমজুরের কাজ করতে হবে না। শুধু অনুশীলন করবেন। মুসকিল আসান হওয়ায় খুশি গোটা মালো পরিবার।

“সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন (বালুরঘাট শাখা)”-এর প্রতিনিধি গৌতম গোস্বামী ‘ইনসাইড স্পোর্টস’ কে জানান, “পল্লব মালো আমাদের জেলার প্রতিভাবান এক অ‍্যাথলিট। পেটের ভাত জোগার করতে গিয়ে খেলাটাই প্রায় ছেড়ে দিচ্ছিল। চোখের সামনে এক প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের এমন পরিণতি দেখা যায় না। সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন -এর মাধ‍্যমে ওর পাশে থাকতে পেরে ভাল লাগছে। ওকে আমরা বলে দিয়েছি, খাওয়া নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হবে না। দিনমজুরের কাজও করতে হবে না। এখন শুধু মন দিয়ে অনুশীলন করুক।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here