ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,বালুরঘাট : জেলার ক্রিকেটে সুষ্ঠু পরিকাঠামো নেই। প্রচারে,প্রসারে ক্রিকেট এখন এক নম্বরে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার ক্রিকেট অন্ধকারেই পড়ে আছে। এমনটা জানিয়ে কয়েক মাস আগে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের ক্রিকেট সচিব মনোজ ভার্মা। আর এবার মুখ খুললেন সিএবির প্রাক্তন কর্তা বিশ্বরূপ দে। সিএবি কর্তাদের ইঙ্গিত করে বিশ্বরূপ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলেন,”ঠান্ডা ঘরে না বসে মাঠে পা রেখে কাজ করুন। তা নাহলে বাংলা ক্রিকেটে তৃণমূল স্তরের গলদটা জানা যাবে না।”
রবিবার, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে বিজয় কুমার সাহা মেমোরিয়াল টি-২০ ক্রিকেটের ফাইনালে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বরূপ দে। যিনি একটা সময় সমস্ত জেলায় পৌঁছে যেতেন। জেলার ক্রিকেট উন্নয়নে চেষ্টা করেছিলেন। একথা যে কোনও জেলার, যে কোনও ডিএসএ কর্তারা এখনও স্বীকার করেন। বালুরঘাট স্টেডিয়ামের টি-২০ ফাইনাল ম্যাচ দেখতে দেখতে বিশ্বরূপ এই প্রতিবেদককে বলছিলেন,”সব জেলাকে মাথায় রেখেই বলছি, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরে ক্রিকেট স্টেডিয়াম আছে। খুব ভাল পরিকাঠামো। কিন্তু সেই ভাবে ব্যবহার করতে পারল না। বাংলার ক্রিকেট যাদের হাতে সেই সব কর্তারা জেলাতেই আসেন না। ঠান্ডা ঘরে বসে নীতি নির্ধারণ করেন। বাংলার ক্রিকেটকে তুলে ধরতে হলে জেলাকে গুরুত্ব দিতেই হবে। ঠান্ডা ঘরে না বসে ঘাষে পা রেখে মাঠ করুন। টি-টোয়েন্টি ফাইনাল ম্যাচ দেখতে শীতের সন্ধ্যায় এত মানুষ মাঠে এসেছেন। ভাবা যায় না। জেলা ভাল ক্রিকেট চায়।”
সিএবির তো ধনী সংস্থা। কোনও সময়ই কি সিএবি বাংলার ক্রিকেটের কথা ভেবেছে? যদি ভেবেই থাকে তাহলে রনজি দলে ভিন রাজ্যের ক্রিকেটারদের সংখ্যা বেশি কেন? আপনারা যখন সিএবিতে ছিলেন, তখন কি করেছেন? প্রশ্নের জবাবে বিশ্বরূপ দে বলছিলেন,”আমি নিজের মুখে বললে খারাপ দেখায়,তবু যখন জানতে চায়ছেন তখন বলি, ক্রিকেট উন্নয়নের জন্য আমরা শুধু জেলার সদর শহরে আটকে থাকিনি। পশ্চিমবঙ্গে ৬৪ টি সাবডিভিশন আছে। প্রতিটি সাবডিভিশনে ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শুধু কলকাতার কর্তারা নই,জেলার কর্তারাও ঠিক ভাবে সাবডিভিশনে যায় না। জেলার কর্তাদের জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন। আর একটা তথ্য দিই, গত রনজি ট্রফির বাংলা দলে যে সব বাঙালি ক্রিকেটার খেলেছে তাদের মধ্যে অভিষেক পোড়েল ছাড়া সব আমাদের সময়ে উঠে এসেছে। এখন সেই অর্থে বাংলা থেকে ক্রিকেটার উঠে আসছে কোথায়? বালুরঘাট স্টেডিয়ামে আগে কি সুন্দর মাঠ ছিল। এখন সেই সুন্দর ব্যাপারটা নেই। সব যেন থমকে গেছে। গৌতম গোস্বামী এখনও বালুরঘাটে টুর্নামেন্ট করে একটা গতি আনার চেষ্টা করছে। তবু জেলা অন্ধকারেই আছে।”
কলকাতার কর্তাদের সঙ্গে জেলার কর্তাদের মধ্যে কি সমন্বয়ের অভাব? কিছুটা তো আছেই। সব খেলার ক্ষেত্রেই এই সমস্যাটা আছে। এখানে এসে শুনলাম, দুই দিনাজপুরে আইএফএ সচিব অনির্বান দত্তর আসার কথা ছিল। কিন্তু দুই জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিবরা নাকি আইএফএ সচিবকে বলেছেন,তাঁরা থাকতে পারবেন না। অনির্বান দত্ত সেই কারণেই আসেননি। তিনি ডিএসএ সচিবদের সম্মান জানিয়ে তাঁদের অনুপস্থিতিতে এলেন না। এই দুই দিনাজপুর ডিএসএ সচিবদের উচিৎ ছিল জেলায় থাকা। যেটা ঘটল এটা খুব খারাপ ব্যাপার। এভাবে চললে কিন্তু খেলাগুলি কলকাতা কেন্দ্রিক হয়ে পড়বে। সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।”