ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : উল্টে দেখুন, পাল্টে গিয়েছে। রাজ্য বাস্কেটবল সংস্থার নব নিযুক্ত কর্তাদের যেন এটাই এখন স্লোগান। এক মাস আগে সংস্থার নির্বাচনে জিতে শেষ হতে বসা বাংলার বাস্কেটবলকে জিওন কাঠির স্পর্ষে আবার চাঙ্গা করতে বদ্ধপরিকর। বুধবার বিকেলে কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব তাঁবুতে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই জানালেন ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রদীপ আড্ডি, সুব্রত দাস, সুহাস ভট্টাচার্য,নিতাই ব্যানার্জিরা।
অতীতে দেখা গেছে, বাংলায় বাস্কেটবল নিয়ে কারোর কোনও আগ্রহই নেই। পরিকাঠামো অত্যন্ত খারাপ। সারা পৃথিবী যেখানে উডেন কোর্টে প্র্যাকটিস করছে, বাংলায় সেখানে করে হার্ড কোর্টে। যেখানে চোটের সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি। অন্ততপক্ষে পাঁচ-ছ’টা ইন্ডোর কোর্ট থাকা দরকার। ক্লাবগুলোও নিজেদের উদ্যেগে সেভাবে টুর্নামেন্টই করে না। তরুণ প্রজন্মের জন্য ক’টা কোচিং ক্যাম্প হয় এখানে? সারা বছর এখানে এই একটাই ইভেন্ট হয়, রেড রোডের ধারে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ঠিক পিছনে।
এতদিন ডব্লিউবিবিএ-এর সাধারণ সচিব গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় সেভাবে বাংলার বাস্কেটবলে প্রসার বা প্রচার কিছুই করতে পারেননি।
সেই অতীত ভুলে বাংলায় বাস্কেটবলকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় বর্তমান কর্তারা।
প্রথমে তাঁরা খেলোয়াড়দের মান উন্নয়নের জন্য স্পোর্টস সায়েন্সের উপর বিশেষ জোর দিতে চায়ছেন।
প্রাধান্য পাচ্ছে নিয়মিত ভাবে টুর্নামেন্ট করা। আগামী ১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে জুনিয়র বাস্কেটবল লীগ (বালক ও বালিকা)। রাজ্যের ৫টি জেলা থেকে বালক বিভাগে ১৮টি এবং বালিকা বিভাগে ১৬টি দল অংশগ্রহণ করতে চলেছে সেই প্রতিযোগিতায়,চলবে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে পর্যন্ত। নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী এর পরেই থাকছে মহিলা এবং পুরুষদের সিনিয়র প্রথম ডিভিশন লীগ ম্যাচ। চলতি ববছরে রাজ্য বাস্কেটবলের ক্যালেন্ডারে চারটি নতুন প্রতিযোগিতা যোগ হতে চলেছে।যার মধ্যে অন্যতম থ্রি অন থ্রি স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপ (জুনিয়র – বালক ও বালিকা, সিমিয়র – পুরুষ ও মহিলা), ইউথ অনুর্ধ ১৭ লীগ (বালক ও বালিকা), কিডস্ চ্যাম্পিয়নশিপ অনুর্ধ ১১ (বালক ও বালিকা) এবং ডিস্ট্রিক্ট নবিস্ চ্যাম্পিয়নশিপ (বালক ও বালিকা)।
পাশাপাশি ইন্টার স্কুল, ইন্টার কলেজ এবং ইন্টার ইউনিভার্সিটি চ্যাম্পিয়নশিপ গুলিকে নতুন মোড়কে সাজানোর রূপরেখা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গেছে। জাতীয় স্তরে বাংলার খেলোয়াড়দের মান উন্নয়নের জন্য শুধুমাত্র হার্ড ট্রেনিং নয়, স্পোর্টস সায়েন্সের সঠিক ব্যবহার প্রসঙ্গেও একাধিক পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়।
এদিন ভারতীয় দলের তারকা বাস্কেটবল খেলোয়াড় পুনম চর্তুবেদী, অঞ্জনা ডেজি এক্কা, আন্তর্জাতিক রেফারি অতনু ব্যানার্জি সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এদিন বাংলার বাস্কেটবল প্রসার ও প্রচারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় মহিলা বাস্কেটবল দলের দীর্ঘাকায় খেলোয়াড় পুনম চতুর্বেদী। উচ্চতা ৭ ফুট। পুনমের দেশের বাড়ি পুনে। আর এক খেলোয়াড় অঞ্জনা ডেজি এক্কার (ওড়িশার মেয়ে) সঙ্গে বেহালায় এক সঙ্গে থাকেন। দুজনেই ইস্টার্নরেলে চাকরি করেন। পুনম এত লম্বা যে অফিস আর মাঠ ছাড়া আর কোথাও বেড়োতে পারেন না। তাঁর অস্বাভাবিক লম্বা চেহারা দেখতে ভিড় জমে যায়। “বাংলায় ভাল মানের বাস্কেটবল খেলোয়াড় আছে। অনুশীলনের সুযোগ আর ভাল টুর্নামেন্ট হলে আরও প্রতিভা উঠে আসবে।” বলছিলেন পুনম। একই কথা অঞ্জনার গলায়। তিনি ‘ইনসাইড স্পোর্টস’-কে বলছিলেন, “গত পাঁচ বছর ধরে এখানে ভাল ভাবেই খেলছি। বাংলায় বাস্কেটবলের প্রচার নেই। তাই জনপ্রিয়তা কম। খোঁজ নিয়ে দেখুন, বাংলায় খুব ভাল খেলোয়াড় আছে। কর্তারা জেলা, স্কুল, ক্লাবে নতুন করে টুর্নামেন্ট শুরু করছে। এটা খুব ভাল উদ্যোগ।”