ইনসাইড স্পোর্টসেরঈ প্রতিবেদন : ইনভেস্টর শ্রীসিমেন্টের পাঠানো চুক্তিপত্রে এখনও সই করেনি ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা। আর তাই নিয়ে সোসাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্তা নিতু ওরফে দেবব্রত সরকারের মুন্ডপাত চলছেই। এতদিন চুপ করেছিলেন। এবার মুখ খুললেন ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার। সোমবার মধ্য কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে পল্টু দাসের প্রয়াণ দিবস অনুষ্ঠানের শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। বিস্ফোরক দেবব্রত সরকার। নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করে দিলেন দেবব্রত সরকার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দেবব্রত যা বললেন সেটাই তুলে ধরা হল।
প্রশ্ন : চুক্তিপত্রে সই না করার কারণ জানা যাবে?
দেবব্রত সরকার : আমরা সকল সাংবাদিকদের অনুরোধ করছি, যারা টার্মসিট ও ইনভেস্টারের চূড়ান্ত চুক্তি দেখতে চায় তারা আমাদের ক্লাবের সচিবকে চিঠি লিখে আবেদন করুক। আমরা দুটি চুক্তি পত্র দেখাবো। দেখার পর তারা যেন নিজেদের মতামত লিখে আসে। একই প্রস্তাব থাকল জনসাধারণ ও ক্লাবের সদস্যদের কাছেও। তাঁরাও চাইলে ক্লাবে এসে টার্মসিট ও চূড়ান্ত চুক্তিপত্রের বয়ান দেখে যেতে পারেন।
প্রশ্ন : টার্মসিট ও চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে কি কোনও পার্থক্য আছে?
দেবব্রত সরকার : বিস্তর ফারাক আছে। এখানে মাত্র দুটি ঘটনা বলব,তার বেশি বলব না। টার্মশিটে আছে অ্যাসাইনমেন্ট করে দিতে হবে। যা নিউ এনটিটি হবে। আমরা তো রাজি আছি। কিন্তু চুক্তিপত্রে আছে ওরা যখন চলে যাবে তখন ওটা কিনে নিতে হবে। তার মানে ক্লাবটাকে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমি ক্লাব বিক্রি করার মালিক? এটা পৃথিবীর কোন ক্লাবে আছে?
দ্বিতীয়ত, ওরা এখন বলছে এই ল্যান্ড ওদেরকে ট্রান্সফার করে দিতে হবে। কিন্তু এটা তো আর্মিদের ল্যান্ড। আমরা তো ওদের ব্যবহার করার রাইটস দিয়ে দিয়েছি। ওরা বলছে, আর্মিদের চাঁদা তারা দিয়ে দেবে। আমাদের সেটা লিখে দিতে বলা হচ্ছে। শুধু তাই নয়? আমাদের যে অফিস আছে সেটা টেন্টের বাইরে নিয়ে যেতে বলছে। হিউমেলেশনের চূড়ান্ত জায়গায় গিয়েছে। (পাশে বসা অজিত ব্যানার্জিকে দেখিয়ে বললেন) এই লোকটা ওদের বলেছিল, “৫০ হাজার টাকা দিয়ে ক্লাবটাকেই কিনে নেবেন? আমাদের টেন্ডার ফর্মটার দাম পাঁচ হাজার ৫০ হাজার টাকা।”
প্রশ্ন : বাঙুর কর্তাদের সঙ্গে আপনাদের কোনও কথা হয়েছে?
দেবব্রত সরকার : এখনও পযর্ন্ত বাঙুর গোষ্ঠীর কর্তাদের সঙ্গে আমাদের কখনও দেখা বা কথা বলা কোনওটাই হয়নি। আই থিঙ্ক, ওঁরা ভদ্র মানুষ। আশাকরি সমস্যার সমাধান হবে।
প্রশ্ন : তার মানে কেউ চক্রান্ত করছে?
দেব্রবত সরকার : যে বা যারা (পড়ুন শ্রেনিক শেঠ) যে কাজ করছে তা ঠিক করছে না।
প্রশ্ন : আজ তো এসসি ইস্টবেঙ্গলের সিইও সিবাজি সমাদ্দারও আপনাদের অনুষ্ঠানে দেখা গেল। অনুষ্ঠান শেষে আপনারা আলোচনাতও বসেছিলেন। সিইও বলেছেন আশা করি সব সমস্যা মিটে যাবে।
দেব্রব্রত সরকার : আমি আবার বলছি, এখনও আমি আশাবাদী। হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : এবারের টিম এত খারাপ হল কেন?
দেব্রত সরকার : দল নিয়ে প্রচন্ড বিরক্ত আমরা। এটা টিম হয়েছে? টিম করার যথেষ্ট সময় ছিল। এবারের আইএসএল ম্যাচে শুরুতেই ম্যাচের সেরা হল ইরসাদ। পরে তাকে আর কেন খেলানো হল না? বিকাশ জারিয়া, মহম্মদ রফিককে কেন খেলানো হল না? সব কিছুর মধ্যে আমাদের অনেক প্রশ্ন আছে যা সদস্য-সমর্থকদেরও। বাজারে কে কি বলছে (ইঙ্গিত শ্রেনিক শেঠ। যিনি বাঙুর গোষ্ঠীর প্রতিনিধি) আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এটা দিয়ে আমরা বাঁচি না। আমরা কাজ দিয়ে বাঁচি। ওরা ৫০ কোটি টাকা টাকা খরচ করেছে আর আমাদের ৫০০ কোটি টাকা লেগাসি চলে গেছে।
প্রশ্ন : তাহলে সমস্যার সমাধান কি ভাবে হবে?
দেবব্রত সরকার : কোনও সমাধান-টমাধান বুঝি না। যা পেপার আসবে, সদস্যরা যা বলবে তাই করব। আমি আবার বলছি, সাংবাদিকরা টার্মসিট ও চুক্তিপত্র দেখে বলুক এটা ঠিক, তাহলেই সই করে দেবো। কত দম থাকে দেখি। কিছু সংবাদ মাধ্যম, সাংবাদিক,কোন ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে উদ্দেশ্য নিয়ে লিখছে।