ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : শ্রীরামপুর সাব ডিভিশন ফুটবলে গড়াপেটা ম্যাচ রুখতে বদ্ধপরিকর সন্তোষ কুমার সিং সহ একাধিক কর্তা। শ্রীরামপুর সাবডিভিশনাল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের (SSSA) যুগ্ম সচিব হলেন সন্তোষ কুমার সিং। তিনি শনিবার ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে জানিয়েছিলেন, ম্যাচ গড়াপেটা বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সুষ্ঠু ফুটবলের জন্য গড়াপেটা বন্ধ করতে হবে। তাঁকে স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের একাধিক কর্তাও সমর্থন করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার শ্রীরামপুর সাব ডিভিশন ফুটবলের সুপার ডিভিশনে একটি ম্যাচ (সৌরভ সংঘ ও শক্তি সংঘ) গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছিল।
সুপার ডিভিশনের অঙ্কটা দাঁড়িয়েছিল গ্রপ ‘টু’-এর শেষ ম্যাচ। ৭ ম্যাচ খেলে রিষড়া স্পোর্টিংয়ের ৪ পয়েন্ট। আর ৭ ম্যাচ খেলে ৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে শক্তি সংঘ। যদি অরোরার কাছে রিষড়া হেরে যায় আর সৌরভ সংঘের বিরুদ্ধে শক্তি সংঘ জিতে যায় তাহলে অবনমন থেকে বেঁচে যাবে শক্তি সংঘ। আর অবনমনে চলে যাবে রিষড়া স্পোর্টিং। স্বাভাবিক ভাবেই শ্রীরামপুর ফুটবলে অভিযোগ উঠেছিল যে, সৌরভ সংঘ, শক্তি সংঘকে ম্যাচ ছেড়ে দেবে। রবিবার এই মর্মে ‘ইনসাইড স্পোর্টস’ -এ প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছিল। তারপরেই নড়েচড়ে বসেন শ্রীরামপুর সাব ডিভিশনাল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব সন্তোষ কুমার সিং। গড়াপেটার আশঙ্কা, অভিযোগ যাতে সত্যি না হয় তার জন্য আজ, সোমবার দুটি ম্যাচে অবজার্ভার পাঠানো হয়েছিল। সন্তোষ সিং নিজে মাঠে উপস্থিত ছিলেন। সন্তোষ সিং সহ অ্যাসোসিয়েশনের কর্তাদের এমন সতর্কতা প্রশংসনীয়। স্ট্রেট ম্যাচ হয়েছে। সৌরভ সংঘ ২-১ গোলে হারিয়েছে শক্তি সংঘকে। অপর ম্যাচে অরোরাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে রিষড়া স্পোর্টিং। ফলে সুপার ডিভিশন থেকে অবনমন হয়ে গেল শক্তি সংঘের। আর অবনম থেকে বেঁচে গেল রিষড়া স্পোর্টিং।
এই গড়াপেটা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় শ্রীরামপুর সাব ডিভিশনাল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব পাপ্পু ওরফে সন্তোষ কুমার সিং ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,” আপনাকে আগেও বলেছি, আমাদের লক্ষ্য সুষ্ঠু ফুটবল। কিছু ক্লাবের পুরনো কর্তা আছেন যারা চেনগটআপ ম্যাচ খেলে। এই খবর আমার কাছেও এসেছে। সামনের বছর থেকে যাতে গড়াপেটা না হয় তার জন্য আমরা একটা কমিটি গড়ব। আশাকরি সামনের বছর থেকে এই গট আপের অভিযোগ উঠবে না।”
আপনিই তো এখন SSSA এর মুখ। শুনেছি অনেক কিছু পরিকল্পনা নিয়েছেন। বলা যাবে? উত্তরে সন্তোষবাবু জানান,”দেখুন আমি আবেগ নিয়ে চলি না। বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলতে হবে। পরিকল্পনা অনেক আছে। প্রথম লক্ষ্যই হল আমাদের লিগে যত বেশি এলাকার ছেলেরা ফুটবল খেলুক। নতুন নতুন ফুটবল প্রতিভা তুলে আনতে হবে। গটআপ বন্ধ করতে হবে। বাংলার ফুটবলে আমরা সাপ্লাই লাইন করতে চাই। সবার সহায়তা পেলে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব।”
SSSA ফুটবল সাব কমিটির যুগ্ম চেয়ারম্যান সৌমেন ঘোষ বলেন,”আমাদের অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে খারাপ কিছু প্রকাশ হলে খারাপ লাগে। আমরাও অ্যাসোসিয়েশনকে ভালবাসি,ফুটবল ভালবাসি। গড়াপেটা বন্ধ হোক আমরাও চাই। ” SSSA এর ফুটবল সচিব অজয় দাস বলেন,”আজকের দুটি ম্যাচ যাতে একই সময়ে শুরু হয় তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিদের লিখিত ভাবে আমরা জানিয়ে দিয়েছিল। ম্যাচ যাতে স্ট্রেট হয় তার জন্য আমরা যাবতীয় পদক্ষেপ করেছিলাম।”
এদিকে, জানা যায় নিজেদের রিষড়া -অরোরা ম্যাচে মাঠে না থেকে শিশির ঘোষ সৌরভ সংঘ ও শক্তি সংঘ ম্যাচ দেখতে বৈদ্যবাটির মাঠে ছিলেন। এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে শিশির ঘোষ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলেন,”যে ম্যাচে গড়াপেটার অভিযোগ যখন উঠেছে তখন তো আমি সেই ম্যাচে যেতেই পারি। সমস্যা কোথায়? কোন মাঠে আমি যাবো সেটা আপনি তো ঠিক করে দেবেন না। আমি তো আর অ্যাসোসিয়েশনের ফুটবল সাব কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে যায়নি। যেহেতু আমাদের দলের অবনমনের ব্যাপার জড়িয়ে আছে সেখানে নিজের চোখে দেখতে চেয়েছি বলেই ওই ম্যাচে গিয়েছি। এতে প্রশ্ন উঠছে কেন? গড়াপেটা বন্ধ করতেই হবে। আশাকরি সামনের বছর থেকে সেটা হবে।”