ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : সমাজের বিভিন্ন স্তরে আরও বেশি করে রক্তদান শিবির করা উচিত। এই ব্যাপারে খেলাধূলার জগতের মানুষকে আরও বেশি করে এগিয়ে আসার ডাক দিলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেন, প্রাক্তন অলিম্পিয়ান গুরবক্স সিং, ভারতীয় ফুটবলার অমিত ভদ্র, আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত, রেফারি সংস্থার সচিব উদয়ন হালদার,আইএফএ সহসচিব শুভাশিস সরকাররা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেহালার বিজি প্রেস এলাকার করুণাময়ী মঠ সংলগ্ন লায়নস ক্লাব অফ কলকাতা সাউদার্নের পরিচালনায় সুষ্ঠুভাবে হয়ে গেল রক্তদান শিবির। স্থানীয় রক্তদাতাদের উৎসাহ দিতে হাজির প্রাক্তন রাজ্যপাল থেকে খেলাধূলা জগতের ব্যক্তিত্বরা।
উদ্যোক্তারা আশা করেছিলেন ৬০ জন রক্তদাতা উপস্থিত হবেন। কিন্তু কিন্তু দেখা গেল অমূল্য রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন শতাধিক মানুষ। রক্তদাতাদের এমন স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগদান দেখে মুগ্ধ প্রাক্তন রাজ্যপাল ও মোহনবাগান পরিবারের সদস্য শ্যামল সেন। তিনি অনুষ্ঠানে এসে অতীতের সেই ঐতিহাসিক ক্রিকেট ম্যাচে নরি কন্ট্রাক্টর ও ফ্র্যাঙ্ক ওরেলের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “টেস্ট ক্রিকেটে নরি কন্ট্রাক্টর মারাত্মক আহত হয়েছিলেন। কিন্তু ফ্র্যাঙ্ক ওরেল রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন ফ্র্যাঙ্ক। তারপর থেকে সিএবিতে তাঁর নামেই রক্তদান শিবির হয়। আপনাদের কাছে অনুরোধ, খেলা ধূলার জগতের মানুষ রক্তদান শিবির করতে এগিয়ে আসুন। এটা একটা মহত কাজ।”
ভারতের প্রাক্তন অলিম্পিয়ান (হকি) গুরবক্স সিং বলেন,”বেহালার এই সংস্থা মহত কাজ করল। মানুষের পাশে থাকতে হবে মানুষকেই। রক্তদান করা একটা প্রকৃত মানুষের সেরা কাজ। খেলাধূলার জগতও এই কাজ করে। আরও বেশি করে করতে হবে।”
ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার অমিত ভদ্র বলেন, “খেলা ছাড়ার পরও আমাদের একটা দায়বদ্ধতা থাকে। সমাজকেও আমাদের কিছু ভাল কাজ দিতে হবে। রক্তদান এমন একটা কাজ যা এখানে না এসে পারলাম না।” আইএফএ সচিব অনির্বান দত্ত বলেন,”আমি একটু দেরিতে এসে দেখলাম,কোনও বেড খালি নেই। রক্ত দেওয়ার জন্য মানুষ লাইন দিয়ে আছেন এমন দৃশ্য আগে কখনও দেখিনি। এই এলাকার লায়নস ক্লাবকে ধন্যবাদ। এলাকার তরুণ প্রজন্মর কাছে আমার আবেদন, মাঠে আসুন,খেলুন এবং এইরকম মহত কাজের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হোন।”
কলকাতা রেফারি সংস্থার সচিব উদয়ন হালদার বলছিলেন,”যার উদ্যোগে বেহালার এই রক্তদান শিবির হল সেই চিত্তরঞ্জন দাসকে অসংখ্য অভিনন্দন জানাই। পাড়ায় পাড়ায় বহু ক্লাব রক্তদান শিবির করে। এই প্রচেষ্টায় খেলাধূলা জগতের ভূমিকা আগেও ছিল,ভবিষ্যতেও থাকবে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এদিনের রক্তদান শিবিরের প্রধান উদ্যোগ নিয়েছেন চিত্তরঞ্জন দাস। তিনি অতীতে রেফারি ছিলেন। পরে সেইসব ছেড়ে ব্যবসা করেন। সাফল্যও পান। ময়দান ছাড়লেও মন পড়ে থাকে গড়ের মাঠেই। এই চিত্তরঞ্জন দাস নিজের কোম্পানিতে ১১ জন রেফারিকে চাকরি দিয়েছেন। সেই কথা স্বীকার করেছেন সিআরএ সচিব উদয়ন হালদার। চিত্তরঞ্জনবাবু বলেন,”রেফারির কোনও স্পোর্টস কোটায় চাকরি নেই। আমি একটা সময় রেফারি ছিলাম। বাংলার রেফারিদের কি অবস্থা আমি জানি। তবে আমার সীমিত ক্ষমতা। তার মধ্যেও যদি রেফারিদের পাশে থাকতে পারি তাহলেই আমার সন্তুষ্টি। এই বছর আমরা প্রথম রক্তদান শিবির করলাম। সবাই এগিয়ে এসেছেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থেকে যেভাবে আমাদের উৎসাহ দিয়ে গেলেন তা কখনও ভুলতে পারব না। রক্তদাতাদের সঙ্গে উপস্থিত বিশেষ অতিথিদের আমার সেলাম জানাই।”