ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন, ১৯ মে : চূড়ান্ত টার্মশিটে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা সই করে দিলে তিনটি খেলা – ক্রিকেট, হকি ও অ্যাথলেটিক্সের স্বত্ব ছেড়ে দেবে বাঙ্গুর গোষ্ঠী! কিন্তু তার আগে চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সইটা করতেই হবে। লগ্নিকারী এই বাঙ্গুর গোষ্ঠীর একটি সূত্র মারফত তেমনটাই জানা গিয়েছে।
বাঙ্গুর গোষ্ঠীর নতুন এই ভাবনার ফলে দুটি স্বাভাবিক প্রশ্ন উঠে আসছে। প্রথম প্রশ্ন, লগ্নিকারীদের সঙ্গে বসে, আলোচনা করে, চুক্তির কিছু ক্লজ পুনর্বিবেচনার জন্য তারা বলতে চান। তার জন্য বাঙ্গুর গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়ে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা একাধিকবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। লগ্নিকারীরা আলোচনায় বসতে নারাজ। তিনটি খেলার স্বত্ব যদি ছেড়েই দেবে, তাহলে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন না কেন?
দ্বিতীয় প্রশ্ন হল, চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই করার পর বাঙ্গুর গোষ্ঠী তিনটি খেলার স্বত্ব ছেড়ে দেবে তার নিশ্চয়তা কোথায়?
বাঙ্গুর গোষ্ঠীর সেই সূত্রটি জানাচ্ছে, চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই করার ইস্যুতে তারা নৈতিক জয় চায়ছেন। কারণ, খোদ হরিমোহন বাঙ্গুর অনেক আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইস্টবেঙ্গল কর্তারা আগে সই করুন। তারপরে আলোচনা করে ক্লাব কর্তাদের অনুরোধ বিবেচনা করবেন। সই করার আগে কোনও আলোচনা নেই। এমন একটা পরিস্থিতিতে বাঙ্গুর গোষ্ঠী যদি সইয়ের আগেই ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের দাবি মেনে নেয়, তাহলে তাদের নৈতিক পরাজয় হয়েছে বলে ক্লাবেরই কিছু কর্তা প্রচার করবে। কাজেই এই রাস্তায় হাঁটতে নারাজ। চুক্তিপত্রে সই মানেই ‘নৈতিক জয়’ বাঙ্গুরের। তারপরই নাকি ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের তিনটি খেলার স্বত্ব ছেড়ে দেবে। কারণ তাঁরাও জানে, বোঝে যে, একসঙ্গে চলতে গেলে সমঝোতার প্রয়োজন হয়। কিন্তু যা কিছুই হোক’ চুক্তি পত্রে সইয়ের পরে।
তিন খেলার স্বত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তার প্রশ্নে সেই সূত্রটি জানাচ্ছে, ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের বিশ্বাস করতেই হবে। এছাড়া কোনও পথ খোলা নেই। কারণ, চুক্তি পত্রে সই করার আগে কোনওরকম আলোচনায় বসতে নারাজ লগ্নিকারী সংস্থা। নিজেদের সিদ্ধান্তে অনঢ়।
হটাৎ কি এমন হল, যে তিন খেলার স্বত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়ে ফেলেছেন বাঙ্গুর গোষ্ঠীর কর্তারা? জানা গেল, ক্রিকেট, হকি ও অ্যাথলেটিক্স – এই তিন খেলায় বিশেষ কিছু নেই। হকি প্রায় শেষ। অ্যাথলেটিক্সও বছরে একবার রাজ্য মিটে ক্লাব অংশ নেয়। ক্রিকেটে সিএবি প্রতিনিধিত্ব করা গেলেও, এই আর্থিক মন্দা বাজারে শুধু টাকা খরচই হবে। রিটার্ন সেভাবে আসবে না। বরং ভাল করে ফুটবল টিমটা করতে চান। বাঙ্গুর গোষ্ঠীর ব্যবসা সর্বভারতীয় স্তরে। সেখানে স্থানীয় ক্রিকেট,হকি ও অ্যাথলেটিক্সের পিছনে মোটা টাকার দল করে কোম্পানির সর্বভারতীয় স্তরে কোনও লাভ নেই। যা ফুটবল টিম কোম্পানিকে প্রচার ও প্রসার দুটোয় দেবে।
প্রসঙ্গত, মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে যে চুক্তিপত্রে সই সাবুদ হয়েছিল, তাতে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সমস্ত খেলার স্বত্ব নিয়েছে বাঙ্গুর গোষ্ঠী। শুধু তাই নয়, মাঠ ও ক্লাব তাঁবুও বাঙ্গুরদের হাতে থাকবে। এই ক্লাব তাঁবুতে কখন সদস্যরা আসবেন, কোন কোন দফতরের কার্যালয় থাকবে তা ঠিক করবে বাঙ্গুর গোষ্ঠীর কর্তারা। যদিও তিনটি খেলার স্বত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার ভাবনার কথা জানা গেলেও, ক্লাব তাঁবু ও মাঠ দেখভালের স্বত্ব ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে লগ্নিকারী কর্তাদের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি।