ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,কলকাতা,২ফেব্রুয়ারি : সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ভারতের প্রাক্তন বোলার অশোক দিন্দা। মঙ্গলবার সিএবিতে অভিষেক ডালমিয়া, স্নেহাশিস গাঙ্গুলি ও স্ত্রী শ্রেয়সীকে পাশে নিয়ে নিজের অবসরের কথা ঘোষণা করেন মেদিনীপুরের নৈছনপুর এক্সপ্রেস দিন্দা।
“আমার ২১ বছরের ক্রিকেট জীবনে অনেকেই আমাকে নানান ভাবে সাহায্য করেছেন। তাদের আজ সবাইকে ধন্যবাদ জানায়। সব থেকে আমি বেশি কৃতজ্ঞ আমার কোচ অটল দেব বর্মনের কাছে। উনি না থাকলে ক্রিকেটার হিসেবে এই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না। একই সঙ্গে মহারাজদার ভূমিকাও অস্বীকার করতে পারব না। রনজি, আইপিএল বা দেশের হয়ে খেলার ক্ষেত্রে মহারাজদার বিশাল ভূমিকা ছিল।” কথাগুলি বলছিলেন অশোক দিন্দা।
ভারতীয় দলের হয়ে ১৩টি একদিনের ম্যাচ ও ৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। আন্তর্জাতিক উইকেট সংখ্যা ২৯টি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে১১৬টি ম্যাচ খেলে উইকেট নিয়েছেন ৪২০ টি। ঘরোয়া একদিনের ক্রিকেটে ম্যাচ খেলেছেন ৯৮টি। উইকেট নিয়েছেন ১৫১টি।
অশোক দিন্দার ২০০৫ সালে রনজি ট্রফিতে অভিষেক হয়। তারপর দেশের হয়ে খেলেছেন। আইপিএলেও খেলেছেন। কিন্তু পরবর্তীকালে বাংলার ক্রিকেটে তিনি বিতর্কিত চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন। বিতর্কিত হওয়ার কারণেই সংবাদপত্রের শিরোনামে আসতেন দিন্দা। গত বছর বাংলার বোলিং কোচ রণদেব বসুর সঙ্গে সাজঘরে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন দিন্দা। পরে কোচ অরুণ লালের সঙ্গেও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন ‘নৈছনপুর এক্সপ্রেস।’ তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলা হলেও ক্ষমা চাননি দিন্দা। শৃঙ্খলা ভাঙার অভিযোগে গতবারের রনজি ফাইনালে দিন্দাকে বাদ দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় কোচ অরুণ লাল ও সিএবি কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, দিন্দাকে আর দলে ফেরানো হবে না। সেই রাগে সিএবি থেকে এনওসি নিয়ে বাংলা ছেড়ে গোয়ায় চলে যান অশোক দিন্দা।
হঠাৎ কেন অবসরের সিদ্ধান্ত? দিন্দা বলেন,”শেষ সৈয়দ মুস্তাক আলি টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েই বুঝলাম শরীর আর চলছে না। তাই ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেললাম। আমার এই জার্নিতে অনেক ভাল ভাল মূহুর্ত আছে। যা ভুলতে পারব না।”
আপনার খেলোয়াড় জীবনে এমন কোনও তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে যা মনে পড়লে খুব বিরক্ত হন? “আজকের দিনে এই তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু না বলাই ভাল।” কথাগুলি বলে এড়িয়ে গেলেন দিন্দা।
তাঁর সেরা বোলিং পার্টনার কে ছিলেন? দিন্দা বললেন,”রণদেব বসুই হলেন তাঁর সেরা পার্টনার। সামি, সৌরভ সরকাররা বাংলার হয়ে বেশি ম্যাচ খেলেনি। তাই রণদেব ছাড়া আর তো কারও সঙ্গে বেশি ম্যাচ খেলিনি।”
এদিন সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া নিউ ট্যালেন্ট কমিটিতে যোগ দেওয়ার জন্য দিন্দাকে প্রস্তাব দেন। অবসর নিলেন। এবার কি রাজনীতি তে দেখা যাবে? কারণ একবার লক্ষ্মীরতন শুক্লার সঙ্গে দিন্দাকে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দিন্দাকে দেখা গিয়েছিল। “আমি সেই ভাবে কিছু ভাবিনি। শুভেন্দুদা (শুভেন্দু অধিকারী) কিন্তু আমাদের মেদিনীপুরের মানুষ। আমরা চিনি। আমাদের দাদা।” হাসতে হাসতে কথাগুলি বলেই ইডেনের সাজঘরের দিকে চলে গেলেন দিন্দা। শেষবারের মতো স্ত্রী শ্রেয়সীকে পাশে নিয়ে সাজঘরের চেয়ারে (এই চেয়ারেই বসতেন দিন্দা) বসলেন। ফটোগ্রাফারদের অনুরোধে পোজও দিলেন। কিন্তু মমতা না শুভেন্দু -এই বিষয় নিয়ে আর মুখ খোলেননি অশোক দিন্দা।