ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,কলকাতা,১৯ অগস্ট : মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবে এখন বসন্ত। ২০১৯-‘২০ মরসুমে লিগ খেতাবের কাছে এসেও ব্যর্থ হতে হয়েছিল। এবার যেন লিগ খেতাব জেতার দারুন একটা সুযোগ এসে গিয়েছে সাদা-কালো শিবিরে।
গতকাল (বুধবার) কল্যাণীতে লিগের শুরুতেই দুরন্ত জয় দিয়ে লিগ অভিযান শুরু করেছে মহমেডান। ক্লাবের এই “ফিল গুড”-এর মুহূর্তে ভাল খবর হল, নতুন একটা কো-স্পনসর পেয়ে গেল মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এই মুহূর্তে মহমেডানের ইনভেস্টর হল “বাঙ্কারহিল”। ক্লাবের এক সিনিয়র কর্তা ও বাঙ্কার হিলের প্রচেষ্টায় কালিম্পংয়ের নতুন কোম্পানি “BIG WIG” মহমেডানের ঘরে এল। আপাতত কলকাতা লিগ ও ডুরান্ড কাপের জন্য এই নতুন কোম্পানি স্পনসর করবে বলে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানালেন ক্লাব কর্তা কামরুদ্দিন।
যিনি স্পনসর করছেন তিনি হলেন কালিম্পংয়ের একমাত্র বিধানসভার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (তামাং)-র বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচা। পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন ফল দিয়ে তৈরি জ্যাম,জেলি, আচার, ফ্রুট ড্রিংস নিয়েই BIG WIG নতুন কোম্পানি তৈরি করেছেন। কোম্পানির প্রধান কার্যালয় শিলিগুড়িতে।
“মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরা সম্মানিত। আমি নিজেও খেলাধূলা ভালবাসি। পাশাপাশি মহমেডানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় আমার কোম্পানির কিছু প্রচারও হবে। তবে আমি যেখানেই যায় সেখানে সম্পর্কটা দীর্ঘদিনের হয়। প্রাথমিকভাবে আমরা দুটি টুর্নামেন্টের জন্য যুক্ত হয়েছি। সব কিছু ঠিক থাকলে অদুর ভবিষ্যতে এই চুক্তি দীর্ঘস্থায়ী করতে চাই।” মহমেডান ক্লাব তাঁবুর কনফারেন্স রুমে বসে ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে কথাগুলি বলছিলেন BIG WIG -এর কর্ণধার ও বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচা।
এই বছর মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব কর্তারা ভাল দল তৈরি করেছেন। সার্বিয়া থেকে দুটি ভাল মানের স্ট্রাইকার নিয়ে এসেছেন। স্তেফান ইলিচক ও নিকোলা স্তোয়ানোভিচ। একদা অনূর্ধ্ব-১৯ সোভিয়েত ইউনিয়ন দলের অন্যতম ডিফেন্ডার আন্দ্রেই চেনির্শভ এখন মহমেডানের কোচ। রাজারহাটা নিউটাউনে থ্রি স্টার হোটেলে প্রায় এক মাস ধরে পুরো টিমকে রেখেছে ক্লাবের ইনভেস্টর “বাঙ্কারহিল”।
আসলে এই বছর কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বড় সুযোগ মহমেডানের। প্রথমত, খুব ভাল দল তৈরি করেছে। দ্বিতীয়ত, এবার সম্ভবত মোহনবাগান,ইস্টবেঙ্গল লিগে খেলবে না। কাজেই গত ৪০ বছরের লিগ খেতাবের খড়া এবার কাটার সম্ভাবনা প্রবল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে শেষবার কলকাতা লিগ জিতেছিল। তারপর গত ৪০ বছর ধরে মহমেডানে আর লিগ খেতাব ঢোকেনি। এবার সেই লিগ খেতাব ঘরে তুলতে মরিয়া সাদা-কালো শিবিরের কর্তারা। মহমেডানের ফুটবল সচিব দীপেন্দু বিশ্বাস বলছিলেন, তারা ছোট ছোট লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চান। আপাতত মহমেডানের প্রথম লক্ষ্য কলকাতা লিগ। তারপরে ডুরান্ড। আর বড় লক্ষ্য আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া।
তবে মহমেডান কর্তারা পিছিয়ে আছে নিজেদের মাঠ নিয়ে। দুই বছর আগে মাটি ফেলে, ঘাস লাগিয়ে মাঠ সংস্করণ করেছিলেন। এখনও মাঠের ঘাস ছাঁটা হয়, রোলও করা হয়। তবুও নিজেদের খেলা অন্য মাঠে খেলতে হয়। নিজেদের মাঠে খেলা হলে মহমেডানের সদস্য-সমর্থকরা দলের খেলা উপভোগ করতে পারতেন। গড়ের মাঠে নিজেদের স্টেডিয়াম থাকা সত্বেও ফাঁকা পড়ে থাকে। মহমেডান কর্তারা সামনের দিকে যখন এগোতে চায়ছেন, তখন নিজেদের মাঠ নিয়ে এত অনীহা কেন?