◆ইউনাইটেড স্পোর্টসের সুব্রত মুর্মু◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : জমজমাট কলকাতা লিগ। সোমবার কলকাতা প্রিমিয়ার ডিভিশনের ‘এ’ গ্রুপের ইউনাইটেড স্পোর্টস ও টালিগঞ্জের ম্যাচে ৮ টি গোল! এখানেই শেষ নয়, এই ম্যাচে দু-দুটি হ্যাটট্রিক। ৭৫ মিনিট পযর্ন্ত ইউনাইটেড ৫-০ গোলে এগিয়ে ছিল। আর সেই কঠিন সময়ে ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিটে টালিগঞ্জের ক্রোমা হ্যাটট্রিক করে ফেলেন। ক্রোমা হঠাৎ জ্বলে ওঠায় শেষ দিকে ইউনাইটেডকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। ক্রোমার একটি শট ও টালিগঞ্জের আর এক মিডিওর শট বারে লেগে ফিরে না এলে এদিন ৫-৫ করেই মাঠ ছাড়তে পারত টালিগঞ্জ অগ্রগামী। ৫-০ গোলে এগিয়ে যেতেই ইউনাইটেড কোচ স্টিভ মাঠে নামান বদলি ফুটবলারদের। ৫-০ গোলে এগিয়ে যেতেই কোচ স্টিভ প্রতিপক্ষকে হাল্কা ভাবে নিয়ে ফেলেছিলেন। আত্মবিশ্বাস থাকা ভাল, তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস থাকাটা যে কাল হতে পারে তা আজ স্টিভকে বুঝিয়ে দিয়েছেন ক্রোমা। শেষ পযর্ন্ত ইউনাটেড স্পোর্টস ৫-৩ গোলে হারাল টালিগঞ্জ অগ্রগামীকে।
জঙ্গলমহলের শালবানী থেকে আরও ভেতরে অখ্যাত এক গ্রাম – টিলাখুলা। অভাবের সংসারে বাবা-মা,দিদি (বিয়ে হয়ে গিয়েছে), বোন এবং সুব্রত মুর্মূ। বোন মৌসুমী পুলিশ দলে ফুটবল খেলেন। বাবা চাষ করেন। দারিদ্র সব সময়ের সঙ্গী। এমন একটা গ্রাম থেকে গত বছর স্কাউট করে সুব্রতকে তুলে এনেছিলেন ইউনাইটেড স্পোর্টসের অন্যতম কর্তা নবাব ভট্টাচার্য। গত বছরই ভবিষ্যতের তারকা হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাঙালি স্ট্রাইকার সুব্রত। পরে চোট পেয়ে যাওয়ায় সন্তোষ ট্রফিতে খেলতে পারেননি। এবার যেন নতুন শপথ নিয়ে লিগ শুরু করেছেন জঙ্গল মহলের সুব্রত। এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধে একটি ও দ্বিতীয়ার্ধে দুটি গোল করে হ্যাটট্রিক করেন সুব্রত। এই ম্যাচে ২০ মিনিটের মাথায় গোল করেন দীপেশ মুর্মু। ৩১ মিনিটে গোল করেন তারক হেমব্রম। এই ম্যাচে টালিগঞ্জের মহম্মদ আসিফ লাল কার্ড দেখেন।
প্রিমিয়ার লিগের এই ম্যাচ ছাড়াও দ্বিতীয় ডিভিশনের ম্যাচে কালিঘাট স্পোর্টস লাভার্সও গোলের ফুলঝুড়ি দেখাল। কল্যাণীর মাঠে কালিঘাট ৭-১ গোলে হারালা নর্থ এন্টালিকে। এবছর স্বপন (বাবুন) ব্যানার্জি কোচ ও গোলকিপার কোচ করেছেন দুই প্রাক্তন ফুটবলার সঞ্জয় মাঝি ও গোপাল দাসকে। দল গড়ার ক্ষেত্রে এই দুই কোচ ছাড়াও মহমেডান কর্তা বেলাল আহমেদেরও ভূমিকা আছে। এবার তারা পাহাড় থেকে বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে সই করিয়েছেন। তাদের মধ্যে মিজোরাম থেকে প্রথম কলকাতা লিগে খেলতে আসা রিকি লালরামঘাকা হ্যাটট্রিক করলেন। সীমান্ত কিস্কু দুটি এবং হর্ষ ভরদ্বাজ ও অরিত্র মন্ডল একটি করে গোল করেন। পরপর তিন ম্যাচ জিতে ভাল জায়গায় রইল কালিঘাট স্পোর্টস লাভার্স।
এদিন প্রিমিয়ার ডিভিশনের ‘এ’ গ্রুপে আরও চারটি ম্যাচ ছিল। নৈহাটি স্টেডিয়ামে এদিনও জয়ের মুখ দেখতে পেল না জর্জ টেলিগ্রাফ স্পোর্টস ক্লাব। পরপর দুই ম্যাচে হারার পর আজ পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করল। সৌভিক ঘোষালের গোলে জর্জ শুরুতে এগিয়ে গেলেও সেই গোল ধরে রাখতে পারেনি। ম্যাচের শেষ দিকে বিল্লু তেলি গোল করে পিয়ারলেসকে সমতায় ফেরান।
অপর ম্যাচে ক্যানিংয়ে আবার হার সাদার্ন সমিতির। এরিয়ান ২-১ গোলে হারাল সাদার্নকে। এরিয়ানের হয়ে গোল করেছেন অমরনাথ বাস্কে ও অ্যারিস্টাইড। সাদার্নের গোলদাতা সনু হালদার। অন্যদিকে রেলওয়ে এফসি ৩- ০ গোলে হারাল ক্যালকাটা কাস্টমসকে। রেলের গোলদাতা চাবালা, বিক্রম প্রধান ও শ্রীকুমার কার্জি। এদিন আবার হেরে গেল খিদিরপুর স্পোর্টিং ক্লাব। পরপর দুই ম্যাচে হারল তারা। জিতেন মুর্মুর গোলে ভবানীপুর ১-০ গোলে হারাল খিদিরপুরকে।
দ্বিতীয় ডিভিশনে জিতেই চলেছে জোড়বাগান। এদিনও দাপটের সঙ্গে খেলে জোড়াবাগান ৩-১ গোলে হারাল রামকৃষ্ণ স্পোর্টিং ক্লাবকে। এই দিন পঞ্চম ডিভিশনের ‘এ’ গ্রুপে চারটি ম্যাচ ছিল। এক্সেলসিয়র্স ২- গোলে হারাল ইন্ডিয়ান বয়েসকে। দর্জিপাড়া মিলন সংগ ও বেলেঘাটা ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন ম্যাচ ১-১ গোলে শেষ হয়েছে। সাউথ ফোক ক্লাব ২-০ গোলে হারাল প্রবাসী উৎকলকে। শ্যামবাজার ক্লাব ও বেনিয়াটোলা ক্লাব ম্যাচ গোলশূন্য ভাবে শেষ হয়েছে।