◆গভর্নিং বডির সভায় সুব্রত দত্ত, অনির্বান দত্ত ও অজিত ব্যানার্জি। বুধবার আইএফএ অফিসে◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : অবশেষে কলকাতা ফুটবল লিগে অবনমন ফিরছে। গত দুই বছর লিগে অবনমন যেমন ছিল না,একই সঙ্গে মোহনবাগানও লিগে খেলেনি। এবার মোহনবাগানও লিগে অংশ নিচ্ছে,পাশাপাশি লিগের সব ডিভিশনে অবনমন থাকছে। বুধবার আইএফএ-র গভর্নিং বডির সভায় অবনমন ফেরার কথা জানান সচিব অনির্বান দত্ত।
এদিনের গভর্নিং বডির সভায় আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেমন, (১) আগামী দুই তিন বছরের লক্ষ্য নিয়ে কলকাতা ফুটবল লিগের সব ডিভিশনের দলের সংখ্যা এমন ভাবে রাখা হবে যাতে ভারসাম্য থাকে। যেমন পঞ্চম ডিভিশনের ‘বি’ গ্রুপের দলের সংখ্যা ১২টি। আবার এই পঞ্চম ডিভিশনের ‘এ’ গ্রুপে দল আছে ৪৪টি। অর্থাৎ মাথা ভারি ডিভিশন। যা সুষ্ঠু ফুটবলের জন্য ভাল নয়। তাই এবার থেকে পঞ্চম ডিভিশন ‘এ’ গ্রুপ থেকে অবনমন হবে ৬টি দল। আর ‘বি’ গ্রুপ থেকে উঠবে ২টি দল। এই ভাবে প্রতিটি ডিভিশনে অবনমন দলের সংখ্যা বাড়ানো হলে আগামী দুই তিন বছরে লিগের সব ডিভিশন ভারসাম্যে পৌঁছতে পারবে। সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত এদিনের গভর্নিং বডির সভায় পাশ হয়ে গেল।
(২) এবারের কলকাতা লিগের জন্য ৮ জনের টাস্ক ফোর্স গঠন করল আইএফএ। গোটা লিগটা এই টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের উপর গুরু দায়িত্ব থাকবে। এই টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা হলেন, সুফল গিরি, রাকেশ (মুন) ঝাঁ, স্বপন দত্ত, অমল রাহা, শঙ্কর বসু, নজরুল ইসলাম, সুদেষ্ণা মুখার্জি এবং অয়ন চক্রবর্তী।
(৩) লিগের কোনও দল যদি কোনও ম্যাচ না খেলে তাহলে সেই ম্যাচের প্রতিপক্ষ দল ৩ পয়েন্টের সঙ্গে পাবে ৩ গোল। পাশাপাশি যে দলটি খেলবে না সেই দলের সেই ম্যাচের ৩ পয়েন্ট তো কাটা যাবেই সঙ্গে তাদের প্রাপ্ত পয়েন্টের আরও ৬ পয়েন্ট কেটে নেওয়া হবে। অর্থাৎ রিফিউজ টু প্লে-এর জন্য সব মিলিয়ে ৯ পয়েন্ট কেটে নেওয়া হবে। (৩) সরাসরি লাল কার্ড দেখলে বা দুটি হলুদ কার্ড দেখলে সেই ম্যাচের সঙ্গে পরের একটি ম্যাচ সাসপেন্ড থাকবেন সংশ্লিষ্ট ফুটবলার। (৪) ফেয়ার প্লে ট্রফি পাওয়ার ক্ষেত্রে এবার থেকে ‘ব্যাড পয়েন্ট’ চালু করছে আইএফএ। যে ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখবে তার মাইনাস ৪ পয়েন্ট কাটা হবে। অর্থাৎ প্রতি হলুদ কার্ডে ৪ পয়েন্ট আর লাল কার্ডে ১০ পয়েন্ট মাইনাস হবে।
(৫) এবার থেকে ইউনিভার্সিটিকেও নতুন করে অ্যাফিলিয়েশন দেওয়া হবে। তবে আইএফএ-এর এই অ্যাফিলিয়েশন পেতে হলে বেসরকারি ইউনিভার্সিটিকে দিতে হবে ১০ লক্ষ টাকা। আর সরকারি ইউনিভার্সিটিকে দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকা। (৬) ফুটবল কোচিং ক্যাম্পগুলিকেও অ্যাক্রেডিটেশন দেওয়ার ব্যাপারে গভর্নিং বডির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিনের সভায় আইএফএ চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত প্রস্তাব রাখেন, যে সমস্ত কোচিং ক্যাম্প থেকে ফুটবলার নেওয়া হবে তার জন্য ক্লাবগুলিকে ট্রেনিং ফিস দিতে হবে। অর্থাৎ একটা কোচিং ক্যাম্প ফুটবলার তৈরি করছে। যখন সেই ক্যাম্পের কোনও ফুটবলার কোনও ক্লাবে সই করছে তারপর কিন্তু সেই ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ কোনও কিছুই পাচ্ছে না। তাহলে সেই সব ক্যাম্প চলবে কি করে? কাজেই কোনও ক্যাম্প থেকে ফুটবলার নিতে হলে নূন্যতম হলেও ক্লাবগুলিকে ট্রেনিং ফিস দিতে হবে।
সুব্রত দত্তর এই প্রস্তাব শুনে সভাপতি অজিত ব্যানার্জি তখন বলে ওঠেন,”চেয়ারম্যানের প্রস্তাব খুবই ভাল। কিন্তু একটা সমস্যা আছে। সমস্যাটা হল, লিগটা এখন বয়স ভিত্তিক হওয়ার ফলে বহু কোচিং ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ক্লাবকে ক্যাম্পের ছেলেদের দিয়ে দিচ্ছে। পুরো উল্টো ব্যাপার দাঁড়িয়ে আছে।” অজিতবাবুর বক্তব্য শোনার পর সুব্রত দত্ত বলেন,”তাহলে অফিস বেয়ারার্সরা বসে আলোচনা করুক। তারপর যা সিদ্ধান্ত হবে সেটা পরের গভর্নিং বডির সভায় তোলা হোক।” আপাতত সভার সদস্যরা সেটাই মেনে পরের গভর্নিং বডির অ্যাজেন্ডায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।