◆শ্রীভূমির গোলদাতা মোগলি সোরেনের সঙ্গে কোচ জয়া বিশ্বাস। বুধবার মোহনবাগান মাঠে◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,২৫ জানুয়ারি : মহমেডান ক্লাবের ইতিহাসে এই প্রথম মহিলা ফুটবল দল গড়ে কন্যাশ্রী কাপে অংশ নিয়েছিল। হাতে সময় কম ছিল। তার মধ্যেও পাহাড় ও সমতলের ফুটবলারদের নিয়ে ভারসাম্যের দল গড়ে চমকে দিয়েছিলেন মহমেডান কর্তারা। প্রথম বছর কন্যাশ্রী কাপে অংশ নিয়েই সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল মহমেডান স্পোর্টিং। কিন্তু শেষ পযর্ন্ত ফাইনালে পৌঁছতে পারল না। বুধবার কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে কঠিন প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গলের কাছে ০-৩ গোলে হেরে গেল মহমেডান।
এবছরের কন্যাশ্রী কাপের জন্য শক্তিশালী দল গড়েছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। কোচ সুজাতা কর নিজের মতো করে, স্বাধীন ভাবে ফুটবলারদের বেছে নিয়েছেন। ধারে ভারে সব দল থেকে অনেকটাই এগিয়ে এবারের ইস্টবেঙ্গল। স্বাভাবিক ভাবে এদিন মহমেডানের বিরুদ্ধে প্রত্যাশিত জয় ছিনিয়ে নিল লাল-হলুদ শিবির। ম্যাচের প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে রিম্পা হালদার গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধের ৬০ ফের গোল করেন রিম্পা। ৭৪ মিনিটে নিমিতার আত্মঘাতী গোলে (৩-০) এগিয়ে যাওয়ার ফলে ম্যাচে ফিরে আসার সব আশা শেষ হয়ে যায় মহমেডানের।
একই দিনে মোহনবাগান মাঠে অপর সেমিফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব ও ওয়েষ্ট বেঙ্গল পুলিশ। হাড্ডাহাড্ডি এই ম্যাচ দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী ও শ্রীভূমির সভাপতি সুজিত বসু, মোহনবাগান ক্লাবের সচিব দেবাশিস দত্ত, আইএফএ-এর প্রাক্তন সচিব জয়দীপ মুখার্জি, ফিফা রেফারি প্রাঞ্জল ব্যানার্জি।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শুরু হয়। আক্রমণ, প্রতি আক্রমণের খেলায় বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করেও নষ্ট করেন শ্রীভূমির ফুটবলাররা। সুযোগগুলি কাজে লাগাতে পারলে শ্রীভূমি অন্তত তিন গোলে জিততে পারত।
ম্যাচের প্রথমার্ধে পুলিশ দলের ফুটবলাররা সমানে লড়াই করলেও দ্বিতীয়ার্ধে সেই ভাবে আর লড়াই করতে পারেননি। বল পজিশন, গোলের সুযোগ তৈরি করা থেকে দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটাই দাপটের সঙ্গে খেলেন শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের ফুটবলাররা। ম্যাচের ৭২ মিনিটের মাথায় মোগলি সোরেন জয় সূচক গোলটি করেন। ওয়েষ্ট বেঙ্গল পুলিশকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত চার বছর হল শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব মহিলা ফুটবল দল গড়েছে। এই প্রথম তারা কন্যাশ্রী কাপের ফাইনালে উঠল। এবার ফাইনালে শক্ত প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল। অবশ্য ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে ভয় পাচ্ছেন না শ্রীভূমির কোচ জয়া বিশ্বাস। তিনি বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গলকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মাঠে খেলা হবে।”
পুরুষ ও মহিলা দলটাকে তিলে তিলে তৈরি করেছেন শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের সচিব রাকেশ (মুন) ঝাঁ। ফুটবলারদের থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা করেছেন। কন্যাশ্রী কাপে প্রথম ফাইনালে পৌঁছেও ‘কুল’ রাকেশ ঝাঁ। তিনি আবার আইএফএ-র সহসচিবও। ম্যাচ শেষে রাকেশ ঝাঁ বলছিলেন,”দল ফাইনালে উঠলে ভাল তো লাগেই। মেয়েরা ভাল খেলছে। আশাকরি ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও ভাল খেলবে।”
আগামী শনিবার কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে দুপুর দুটোয় কন্যাশ্রী কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল ও শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব।