ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : মা হওয়ার পর করোনার জন্য আরও দুই বছর বাড়িতে বসেই কাটাতে হয়েছিল টেবল টেনিস জগতের ‘পদ্মশ্রী’ মৌমা দাসকে। তার মধ্যে আবার করোনায় আক্রান্তও হয়েছিলেন। এরপরও ফিরে আসা যায়? বয়সটা যখন ৩৮ বছর! মনের ইচ্ছে,শক্তি থাকলে সবই সম্ভব। তার দৃষ্টান্ত মৌমা।
প্রায় সাড়ে তিন বছর বোর্ডের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না। তারপরেও যেভাবে এবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে কামব্যাক করে ফাইনালে পৌঁছে ছিলেন তা বাংলার টেবল টেনিসের নতুন প্রজন্মর কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।
মৌমার কামব্যাক যদি বাঙালির আত্মতৃপ্তির অনুশীলন হয়, তাহলে এর উল্টো দিকটাও ভয়ঙ্কর। তা হল বাংলার টেবল টেনিসের কঙ্কাল সামনে এসে পড়ছে। একটা সময় মান্তু-নন্দিতা,মৌমা-পৌলমীরা বাংলার টেবল টেনিসকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তারপর আর কোথায় উঠে এল নতুন ‘মান্তু-নন্দিতা,মৌমা-পৌলমী’? ১৯৯৩ সালে মৌমা টেবল টেনিস শুরু করেছিলেন। আর এখন ২০২২ সাল। অর্থাৎ ২৯ বছর পরেও মৌমা এখনও জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছচ্ছে। সেই ভাবে নতুন মুখ উঠে আসছে না। বিটিটিএ-এর জমানায় একটা সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে বাংলার টিটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আর এখন নতুন সংস্থার কর্তাদের না আছে কোনও পরিকল্পনা,না আছে প্রতিভা খোঁজার চেষ্টা। ফি বছর টুর্নামেন্ট করেই দায়িত্ব শেষ। তাদের চেয়ার দখলে রাখাটাই কি একমাত্র লক্ষ্য? এখনও মৌমা খবরের শিরোনামে আসে। কারণ তাঁর একক প্রচেষ্টা।
মঙ্গলবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের মিট দ্য প্রেসে মৌমা দাস বলছিলেন, “আমি খেলা চালিয়ে যেতে চাই। এখনই অবসর নয়। কোচিং নিয়েও ভাবছি না। আবার এটাও জানিয়ে রাখি,প্যারিস অলিম্পিকের স্বপ্ন দেখতে নারাজ। আমাকে এখন জাতীয় শিবিরে ডাকলেও যাব না। কারণ,আমার শারীরিক সক্ষমতা আগের মতো নেই। এখন ছোট ছোট টুর্নামেন্ট খেলব। ধাপে ধাপে এগোবো। তারপর যদি ফিট হতে পারি তখন দেখা যাবে। আসলে আমি টিটি খেলতে ভীষন ভালবাসি। পরিবারের সবাই সমর্থন করছে। তাই খেলছি। বাকিটা ভবিষ্যৎ বলবে।”
৩৮ বছর বয়সী মৌমা। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় চ্যাম্পিয়ন শিপের ফাইনালে সিজা আকুলার কাছে হেরে রানার্স খেতাব নিজের দখলে রেখে প্রমাণ করে দিলেন ইচ্ছা এবং পরিশ্রম কখনই বিফলে যায় না।
বাংলার টেবল টেনিস প্রসঙ্গে মৌমার জবাব,”আমি ও পৌলমী দুজনে মিলে যে ভাবে দীর্ঘদিন বাংলার টেবল টেনিসকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম,বর্তমানে সেই ধরনের মুখ দেখা যাচ্ছে না।” বিতর্ক থেকে শত হাত দুরে থাকা মৌমা মনিকা বাত্রার সঙ্গে নিজের তুলনা টানতেও নারাজ। রাজনীতিতে আসতে চান কিনা, সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের উত্তরে হেঁসে লুটিয়ে পড়ার উপক্রম মৌমার। ওই হাসিতেই তিনি বুঝিয়ে দিলেন,রাজনীতির জগতে তিনি নেই।
অন্যদিকে, করোনাকে মাথায় রেখে সাংবাদিকদের ও ময়দানের ক্রীড়াপ্রেমি মানুষদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রাখছে কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ী ও ক্রীড়া অনুরাগী অনুরাগ গুপ্ত কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়েছেন। এদিনের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধাননগর (এয়ারপোর্ট) – এর অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ ও প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ দে ও গুডএস হাসপাতালের কর্ণধার সোমা চক্রবর্তী।