◆দুই গোলদাতার সঙ্গে জর্জ কোচ গৌতম ঘাষ◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : ম্যাচের অতিরিক্ত সময় ৬ মিনিট। সেই অতিরিক্ত সময়ের পাঁচ মিনিট অতিক্রান্ত। সেই সময় ম্যাচের শেষ মুহুর্তে ফ্রিকিক থেকে জর্জ টেলিগ্রাফের স্টপার জাহিদ ইউসুফ গোল করে ২-২ করে হারা ম্যাচ ড্র করল। উয়াড়ী শিবির তখন থমথমে। অবিশ্বাস্য হলেও কঠিন বাস্তবটা যেন মানতেই পারছিলেন না উয়াড়ীর ফুটবার থেকে কর্তারা। অন্যদিকে জর্জ টেলিগ্রাফ শিবিরে তখন উল্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে।
সোমবার রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার ডিভিশনে মুখোমুখি হয়েছিল জর্জ টেলিগ্রাফ ও উয়াড়ী ক্লাব। এদিন ম্যাচের শুরুটা চমৎকার করেছিল জর্জ। কিন্তু ২৭ মিনিটে বাপ্পা প্রসাদের আত্মঘাতী গোল হওয়ার পর থেকে নিস্তেজ হয়ে পড়ে গৌতম ঘোষের ছেলেরা। প্রাধান্য নিয়ে খেলতে থাকে উয়াড়ী। জর্জের আত্মঘাতী গোলের দুই মিনিট পর মনদীপ সিং মুলতানি গোল করে উয়াড়ীকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে জর্জ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। ৬১ মিনিটে অমিত এক্কা গোল করে ব্যবধান কমান। ২-১ হওয়ার পর ফের খেলায় আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় উয়াড়ী। আগের কাস্টমস ম্যাচের মতো একাধিক গোল নষ্ট করতে থাকেন উয়াড়ীর ফুটবলাররা। দুটি বল পোষ্টে লেগে ফিরে আসে। জর্জের বক্সে গিয়ে গোলটাই আর করতে পারল না। তার মাসুল দিতে হল জর্জের প্রতি আক্রমণের গোলে।
তবে এই ম্যাচে রেফারি শুভঙ্কর খামারির ম্যাচ পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেমন জর্জ টেলিগ্রাফ দুটি ও উয়াড়ী একটি পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত। তবে নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হওয়ার পরও জর্জের ফুটবলারদের একবারের জন্য রেফারির কাছে গিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেল না। তাহলে কি পেনাল্টি ছিল না? উত্তরে জর্জের কোচ গৌতম ঘোষ বলছিলেন,”আমার প্লেয়ারদের বলে দিয়েছি, রেফারি যত খারাপ সিদ্ধান্ত দিন না কেন, কোনও প্রতিবাদ করা যাবে না। আমরা খেলে জিততে চাই।রেফারি নিজের মতো খেলাক না।” কিন্তু ম্যাচের পর ম্যাচে যদি রেফারির সিদ্ধান্ত তাঁদের বিরুদ্ধে যায় তখন এই মনোভাব থাকবে তো জর্জের?
এদিকে, জেতা ম্যাচ ড্র করে উয়াড়ী শিবিরে নিজেদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়ে যায়। ম্যাচ শেষ হওয়া মাত্র ফুটবলারদের নিয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়েন কোচ মিকি ফার্নান্ডেজ। গোলদাতাদের ছবি তোলার প্রস্তাব সবিনিয়ে ফিরিয়ে দেন উয়াড়ী কর্তারাও। একাধিক গোল নষ্ট করা ও শেষ পাঁচ মিনিট টাইম কিল করতে না পারার জন্য ফুটবলারদের বকাঝকা করছিলেন উয়াড়ীর দুই শীর্ষ কর্তা। তাই দেখে আবার উয়াড়ীর নতুন স্পনসরের জনৈক কর্তা প্রকাশ্যেই কর্তাদের শুনিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। তিনি বলতে থাকেন, “কোচ আর ফুটবলারকে কিছু বলা যাবে না। গোল করতে পারেনি ঠিক আছে। গোল গুলি হলে ওরা(জর্জ) মালা পড়ে ফিরে যেত।” এই কথাগুলি যে উয়াড়ীর কর্তাদের উদ্দেশ্য বললেন তা সহজেই বোঝা যায়। উয়াড়ী সুত্র থেকে জানা যায়, এই স্পনসর নিজের পছন্দ মতো কোচ নির্বাচন করেছেন। কয়েকজন ফুটবলারকেও এনেছেন। তবে আগামী দিনে ম্যাচ ড্র বা হারলে স্পনসর আর উয়াড়ী কর্তাদের মধ্যে অশান্তি,তিক্ততা যে বাড়বে তা এখনই বলে দেওয়া যায়।
এদিন প্রিমিয়ার ডিভিশনের অন্য দুই ম্যাচে ইস্টার্ন রেলওয়ে ও রেনবো ১-১ গোলে ম্যাচ শেষ হয়েছে। রেলওয়ে এফসি- পুলিশ এসি ম্যাচ গোলশূন্য ভাবে শেষ হয়।