ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,২০ এপ্রিল : আদালতের রায়ে আপাতত স্বস্তি উত্তর দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অপসারিত কমিটি। গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন,উত্তর দিনাজপুর জেলার জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনা যে ভাবে সেই জেলার ক্রীড়া সংস্থার পুরো কমিটি ভেঙে দিয়েছেন তা তাঁর কাজের এক্তিয়ারের মধ্যে পরে না। সেই রায়ে আরও বলা হয়, আগের কমিটির অফিস বেয়ারার্সদের অপসারণ এবং নতুন করে তৈরি করা কমিটি (অ্যাডহক কমিটি,অ্যাডভাইসারি কনস্টিটিউশন ড্রাফটিং সাব কমিটি)ও অবৈধ। এই রায়ের ফলে আপাতত স্বস্তি পেলেন অপসারিত সচিব সহ পুরো কমিটি। প্রসঙ্গত, এই জেলা শাসকের কমিটি ভেঙে দেওয়াটা অবৈধ বলে দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন অপসারিত সচিব সুদীপ বিশ্বাস। গত মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে আদালত জেলা শাসকের বিরুদ্ধে রায় দেয়। পাশাপাশি জানানো হয়, এই রায়ের তিন সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিড অবজেকশন জমা করার সুযোগ থাকছে। সেই অবজেকশনের পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য সুদীপ বিশ্বাসরা দুই সপ্তাহ সময় পাবেন। সব মিলিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা কার হাতে থাকবে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও একটি মাস।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উত্তর দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটির বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ জানিয়ে অনেক আগেই মামলা করেছিলেন জনৈক সুহৃদ কুমার দাস। পরবর্তীকালে একাধিক ক্লাব জেলা শাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি অরবিন্দ কুমার মিনার কাছে বেনিয়মের নথি জমা দিয়ে বিচার চেয়েছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অপসারিত সচিব সুদীপ বিশ্বাসকে ডেকে আলোচনাও করেছিলেন জেলা শাসক। তারপরেই জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি ভেঙে দিয়ে ৬ মাসের জন্য সাত জনের অ্যাডহক কমিটিও তৈরি করে দিয়েছিলেন জেলা শাসক। শুধু তাই নয় অপসারিত সচিব সুদীপ বিশ্বাসকে ১০ বছরের জন্য নির্বাসনেও পাঠানো হয়।
এই ব্যাপারে সুদীপ বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সুদীপের একটাই কথা,”এই মুহূর্তে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
এখন প্রশ্ন উঠছে, জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনা একজন আইএএস অফিসার। তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতিও। কমিটি ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর আছে কিনা তা জেলা শাসক কি জানতেন না? নাকি নিজের এক্তিয়ার জেনেও এই পদক্ষেপ করেছেন? কমিটি ভেঙে দেওয়ার পরে আদালত যে রায় দিয়েছে তাতে যে জেলা শাসকের আপাতত যে মুখ পুড়ল তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
এখন প্রশ্ন হল, গত ১১ মার্চ থেকে পুরনো কমিটি ভেঙে যে অ্যাডহক কমিটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাজ চালাচ্ছিল তারা কি আগের মতোই কাজ চালিয়ে যাবেন? নাকি পুরনো কমিটি ফের কাজে যোগ দেবে? আগামী পাঁচ সপ্তাহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার খেলাগুলি কি বন্ধ থাকবে? পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করছে।
এদিকে,গতকাল (বুধবার) বিকেলেই জেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিসে গিয়েছিলেন সুদীপ বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন অ্যাডহক কমিটির চেয়ারম্যান হিমাদ্রি সরকার, অরিজিৎ ঘোষরাও। এই মুহূর্তে কি সুদীপ বিশ্বাসকে ফের ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্ব ফিরিয়ে দেবেন? প্রশ্নর উত্তরে অ্যাডহক কমিটির চেয়ারম্যান হিমাদ্রি সরকার জানান,”দেখুন, আমাদের নিয়ে অ্যাডহক কমিটি করেছেন জেলা শাসক। তাঁর নির্দেশেই আমরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্ব নিয়েছি। এখন জেলা শাসক যদি বলেন, সুদীপকে দায়িত্ব ফিরিয়ে দিতে, তাহলে ফিরিয়ে দেব। জেলা শাসক যা নির্দেশ দেবেন সেটা মেনেই চলব।” জেলা শাসকের সঙ্গে কি আপনাদের এই ব্যাপারে কোনও কথা হয়েছে? হিমাদ্রিবাবু বলেন,”গতকাল তিনি ভীষন ব্যস্ত ছিলেন। আশাকরছি আজ দেখা হবে,আলোচনাও হবে।”