◆প্রচন্ড গরমে গায়ের জামাও খুলতে হয় সাংবাদিকে,তবুও পাখা জোটেনি। বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গল প্রেস বক্সে◆
ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : ইস্টবেঙ্গল প্রেস বক্সে চূড়ান্ত অব্যবস্থা। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তারা যখন ঝাঁ চকচকে লাউঞ্জ, মিউজিয়াম,লাইব্রেরী, ফুটবলারদের সাজঘর তৈরি করেছেন, তখন প্রেস বক্সটা পড়ে আছে সেই মান্ধাত্বা আমলেই। চূড়ান্ত পর্যায়ের অবহেলা। একই দোষে দুষ্ট IFA কর্তারাও। বাংলার ফুটবলের উন্নয়নের জন্য নানান আকাশকুসম পরিকল্পনার কথা বলেন আইএফএ কর্তারা। অথচ সুষ্ঠুভাবে ম্যাচ কভার করার নূন্যতম সুবিধাটাও দিতে পারে না আইএফএ। এর দায় অবশ্যই সচিব অনির্বান দত্ত এবং ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের নিতে হবে।
এদিন ইস্টবেঙ্গল-ইস্টার্নরেল ম্যাচের আগে পৌঁছে গিয়েছেন একাধিক ক্রীড়া সাংবাদিক, ম্যাচ সম্প্রচারের প্রোডাকশনের প্রতিনিধি এবং ধারাভাষ্যকাররা। কিন্তু প্রেসবক্সে জল নেই,পাখা চলে না। প্লেয়ার লিস্ট নেই। বসার জায়গায় ধূলোর স্তুপ। ম্যাচের আগে বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরমে তখন সাংবাদিকরা কাহিল। সেই পুরনো কাচের জানালা। দুই একটি জানালা খোলা গেলেও বাকিগুলি খোলা যায়নি। দমবন্ধ পরিবেশ। ততক্ষণে ম্যাচ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রবীন সাংবাদিক জয়ন্ত চক্রবর্তী যেখানে (প্রেস বক্সের পাশের ঘরে) ম্যাচের ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন সেখানে স্ট্যান্ড ফ্যান আছে অথচ সেটা অচল। জয়ন্তবাবু কিছুটা অসুস্থ, এই গরমে আরও অসুস্থ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল।
পরিস্থিতি দেখে প্রেস বক্স থেকে কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের সভাপতি সুভেন রাহা প্রথমে ফোন করে সমস্যার কথা বলেন আইএফএ সচিব অনির্বান দত্তকে। ফোন ছাড়ার পর সুভেন রাহা ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার ও ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে ফোন করেন। একটু পরে দেবব্রত সরকার বারোটা ছোটো জলের বোতল পাঠান। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ সম্প্রচারের এক প্রতিনিধিকে অনুরোধ করলে কমেন্ট্রি বক্সে জয়ন্ত চক্রবর্তীর জন্য একটা ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়।বেশিরভাগ সাংবাদিকরাই দাঁড়িয়ে ম্যাচ কভার করেন। কোনও কোনও সাংবাদিক প্রচন্ড গরম সহ্য করতে না পেরে গায়ের জামা খুলে ম্যাচ কভার করতে থাকেন। ময়দানে এমন ঘটনা আগে কবে হয়েছে অনেক সিনিয়র রিপোর্টার মনে করতে পারলেন না।
চার বছর পর ইস্টবেঙ্গল মাঠে ম্যাচ হচ্ছে। অথচ আইএফএ,পূর্ত দফতর এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কোনও কিছুই ব্যবস্থা করতে পারেনি। চূড়ান্ত অপেশাদারিত্ব। লিগের অনেক আগেই মোহনবাগান ক্লাব কর্তারা নতুন করে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত প্রেস বক্স তৈরি করেছেন। মহমেডান মাঠে পুরনো প্রেস বক্সটা ভেঙে পড়েছে অনেক আগেই। নতুন করে তৈরি না হলেও মহমেডান কর্তারা নিজেদের উদ্যোগে অস্থায়ী প্রেস বক্স তৈরি করে দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে, চার বছর পর ইস্টবেঙ্গল মাঠে খেলা হচ্ছে। অথচ আইএফএ কর্তারা যেন ‘জেগে ঘুমোচ্ছিলেন।’ আইএফএ,ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এবং পূর্ত দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট। ম্যাচের আগে প্রেস বক্স কি অবস্থায় আছে তার খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি তাঁরা। আইএফএ যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই আছে। চূড়ান্ত অপেশাদার।