ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন :
সোমবার সকাল থেকেই লাল-হলুদ শিবিরে উৎসবের আমেজ। ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবসে সকালে ক্লাব তাঁবুতে গিয়ে পতাকা তোলা থেকে কেক কেটে অনুষ্ঠান শুরু করেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। আর বিকেলে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে মূল অনুষ্ঠান। আর সেই মূল অনুষ্ঠান মঞ্চে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাজির ইনভেস্টর ইমামি গ্রুপের কর্ণধার আদিত্য আগরওয়াল। ছিলেন মণীষ গোয়েঙ্কাও। মঙ্গলবার মধ্য কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে চুক্তি করবে ইমামি। তার ২৪ ঘন্টা আগে লাল-হলুদ শিবিরের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে ইমামি-ইস্টবেঙ্গলের পথ চলা শুরু হয়ে গেল।
লাল হলুদ উত্তরীয় এবং রসগোল্লার হাড়ি দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় ইমামির দুই কর্তাকে। লাল হলুদ মঞ্চে দাঁড়িয়ে আদিত্য আগরওয়াল বলেন, “আজ আমরা লাল হলুদ উত্তরীয় পড়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের কাছে গর্বের বিষয়। আমরা কাল চুক্তিতে সই করতে চলেছি। আমরা ভালো টিম করব। আমরা আবার জিতব। আপনারা শুধু আমাদের সমর্থন করুন”।
সোমবার সন্ধ্যায় ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে তারকার সমাহার। উপস্থিত ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু রাজ্য ক্রীড়া দফতরের সচিব সুব্রত বিশ্বাস। ছিলেন প্রাক্তন অলিম্পিয়ান এবং লিয়েন্ডারের বাবা ভেস পেজ, ইস্টবেঙ্গলের কোচ বিনো জর্জ এবং ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রাজা সুরেশ চৌধুরীর নাতি অমরেশ চৌধুরী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলে খেলা এক ঝাঁক প্রাক্তন তারকা। ছিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত ব্যানার্জি এবং সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া। ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ইস্টবেঙ্গল একটা পরিবারের মতো। আমি ছোট থেকেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। একবার ড্রেসিংরুমে ঢোকার সুযোগ পেয়েছিলাম। একটা ইস্টবেঙ্গল জার্সি চুরি করেছিলাম। পরবর্তীকালে পাড়ায় যখন খেলেছি, সেই জার্সি পরেই খেলেছি।” পাশাপাশি মেয়র ইনভেস্টর ইমামি কর্ণধারের উদ্দেশে বলেন, “ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে শুধু অর্থনৈতিক কারণে যুক্ত হলে চলবে না। আবেগের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।”
এদিন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠা দিবসে এবছর ‘ভারত গৌরব’ সম্মানে ভূষিত করা হল টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ এবং প্রাক্তন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট অধিনায়ক ঝুলন গোস্বামীকে।
ড. রমেশ চন্দ্র (নাসা) সেন মেমোরিয়াল ‘জীবনকৃতি সম্মান’ দেওয়া হল ক্লাবের প্রাক্তন অধিনায়ক গৌতম সরকারকে।
একসময়ের পার্টনার সমরেশ চৌধুরী তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ব্যোমকেশ বোস মেমোরিয়াল ‘জীবনকৃতি সম্মান’ দেওয়া হয় ক্লাবের প্রাক্তন অধিনায়ক স্বপন সেনগুপ্তকে। তাঁর হাতে এই সম্মান তুলে দেন তাঁরই সতীর্থ শ্যাম থাপা। এই স্বীকৃতি পেয়ে স্বপন সেনগুপ্ত বলেন, ‘স্বপ্নেও ভাবিনি ইস্টবেঙ্গল জীবনকৃতি সম্মান দেবে। জ্যোতিষ গুহর হাত ধরে ইস্টবেঙ্গল এসেছিলাম। তারকা ফুটবলারদের সঙ্গে খেলব কোনওদিন ভাবতে পারিনি। আমি সম্মানিত।”
অজয় বসু নামাঙ্কিত সেরা ক্রীড়া সাংবাদিকের সম্মান পেলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক লোকেন্দ্র প্রতাপ শাহি। পুষ্পেন সরকার নামাঙ্কিত সেরা চিত্র সাংবাদিকের পুরস্কার পেলেন চিত্র সাংবাদিক সুবীর মজুমদার। পঙ্কজ গুপ্ত মেমোরিয়াল এবং প্রতুল চক্রবর্তী মেমোরিয়াল রেফারির সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয় সুপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং তপন হালদারকে।
ইস্টবেঙ্গলের এই বিশেষ দিনে শুভেচ্ছা জানাতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগান, মহমেডানের কর্তারাও।