ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : লক্ষ্যে স্থির থাকলে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। মঙ্গলবার গোয়ার মাপুসা শহরে সেটাই করে দেখালেন বাংলার শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবের মেয়েরা। এদিন পুটুবাই ইউনিকর্নকে 2-0 গোলে হারিয়ে IWL-2 পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মাথা উঁচু করে IWL এর মূলপর্বে পৌঁছে গেল শ্রীভূমি এফসি। রিম্পা,মৌসুমিরা শুধু নিজেদের ক্লাবকেই তুলে ধরলেন তাই নয়,বাংলার ফুটবলকে উজ্জ্বল করলেন। 5 ম্যাচে 10 পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল। গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে প্রথমার্ধে গোল শূন্য থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে রিম্পা হালদার ও মৌসুমী মুর্মু মোক্ষম সময়ে একটি করে গোল করে দলকে IWL এর মূলপর্বে তুলে নিয়ে গেলেন।
IWL ফুটবলে বাংলা থেকে এতদিন শুধু মাত্র জায়গা করে নিতে পেরেছিল ইস্টবেঙ্গল। এবার দক্ষতার সঙ্গে সুযোগ করে নিল শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব দল। যা বাংলার ফুটবলে ভাল বিজ্ঞাপন।
তবে এই সাফল্যের পিছনে দুজনকে কৃতিত্ত্ব দিতেই হবে। রাকেশ ঝাঁ। যিনি ময়দানে মুন বলে পরিচিত। তিনি শ্রীভূমি এফসির সচিব। ফুটবল অন্তপ্রাণ। IWL এর লক্ষ্য নিয়ে প্রথমেই রাকেশ নিজের দলের কোচ হিসেবে নিয়ে আসেন সুজাতা করকে। কোচকে দল গড়ার কাজে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন রাকেশবাবু। শুধু তাই নয়, ফুটবলারদের থাকা,খাওয়া,চুক্তির টাকা সব হাত খুলে দিয়েছেন কোচ,ফুটবলারদের চাহিদা মতোই। মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ফোনে যোগাযোগ করলে গোয়া থেকে রাকেশ ঝাঁ ‘ইনসাইড স্পোর্টস’কে বলছিলেন,”আমাদের লক্ষ্যই ছিল IWL খেলা। তার জন্য আমাদের কন্যাশ্রী কাপ চ্যাম্পিয়ন হতে হয়েছে। পরের লক্ষ্য ছিল IWL -2 চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এবার সেটাও হল। এই সাফল্যর জন্য কৃতিত্ত্ব দেব আমাদের কোচ সুজাতা কর ও দলের সকল ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফদের। আমাদের লক্ষ্যটা সবাই মাথার মধ্যে ধাপে ধাপে লড়াই করে এগিয়ে গিয়েছে। আশাকরি IWL মূলপর্বেও দল ভাল খেলবে।”
কোচ সুজাতা কর হলেন বর্তমান বাংলা মহিলা ফুটবলে সব থেকে সফল কোচ। ইস্টবেঙ্গল ও শ্রীভূমি এফসিকে কন্যাশ্রী কাপ দিয়েছেন। যখন তিনি ফুটবলার ছিলেন তখনও গোল করার জন্য লক্ষ্যে স্থির থাকতেন। আর কোচিংয়ে এসে সাফল্য পাওয়ার জন্য ফুটবলেই বুঁদ হয়ে থাকেন। মনে জেদ আছে। দুই বছর আগে ইস্টবেঙ্গলে অসম্মানের স্মৃতি এখনও সুজাতাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। জবাব দেওয়ার জন্য রাকেশ ঝাঁর শ্রীভূমি এফসিকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কোচিংয়ে এসে নিজেকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছেন সুজাতা। তবে সামনে আরও কঠিন পরীক্ষা। রাকেশ ঝাঁর সহযোগিতা আর নিজের জেদ,লক্ষ্যে স্থির থাকলে সম্ভব। ধারাবাহিক সাফল্যেই জোটে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা। সুজাতা সেই দিকেই এগোচ্ছে।