ইস্টবেঙ্গলের নিতু সরকারের চ‍্যালেঞ্জ নিতে পারবেন “বিদ্রোহী” সচিব জয়দীপ?

0

সন্দীপ দে◆

ইস্টবেঙ্গলের ‘অবৈধ’ ফুটবলার ইস‍্যু নিয়ে বোমা ফাটালেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত সরকার। তাঁর ভয়ঙ্কর অভিযোগ। তিনি আইএফএ -এর “বিদ্রোহী” সচিব জয়দীপ মুখার্জিকে ওপেন চ‍্যালেঞ্জ করলেন। রবিবার নিতু ওরফে দেবব্রত সরকার একমাত্র ‘এক্সট্রা টাইম’-এ এক সাক্ষাৎকারে বোমা ফাটিয়েছেন। কন‍্যাশ্রীর সেমিফাইনাল ম‍্যাচ (ইস্টবেঙ্গল-পুলিশ) খেলার জন‍্য জয়দীপই নাকি নিতু সরকারকে ফোন করে অনুরোধ করেছিলেন। ঠিক কি কি বলেছেন নিতু সরকার? তাঁর সেই বক্তব‍্য তুলে ধরা হল।
▪রিপ্লে ম‍্যাচ খেলা প্রসঙ্গে দেবব্রত▪
“জয়দীপ নিজে আমাকে অনুরোধ করে বলেছিল, ম‍্যাচটা ডিসপুট হয়েছে। তুমি প্লিজ কনসিডার করো। তোমরা রিপ্লে ম‍্যাচটা খেলো। জয়দীপ বললো বলেই তো ম‍্যাচটা খেলতে রাজি হলাম। নইলে তো আমরা ফাইনাল ম‍্যাচ খেলতাম।”
▪অবৈধ ফুটবলার প্রসঙ্গে▪
“আমি চাই সাংবাদিক সম্মেলন করা হোক। আইএফএ থাকুক। ক্লাব (ইস্টবেঙ্গল) থাকুক। কে ঠিক? আইএফএ কতটা ভুল? ক্লাব(ইস্টবেঙ্গল) কতটা ভুল? তার বিচার করুক সাংবাদিকরা। যে সিস্টেম আছে সেই সিস্টেমে খেলেছে। ক্লাব ঠিক কাজ করেছে। যার (ফুটবলার) রেজিস্ট্রেশনে নিউ লেখা আছে সেখানে ইন্টারস্টেট বলে কেন ট্রিট করব? আইএফএই তো নিউ লিখেছে।”
▪আইএফএতে বড় ক্লাবের চাপ প্রসঙ্গে▪
“আমি বহু সচিব দেখেছি। ইস্টবেঙ্গল,মোহনবাগান, মহমেডানের প্রেসার থাকবে। বড় ক্লাবের প্রেসার থাকবে। ছোট ক্লাবের ঐতিহ্য বজায় রাখতে হবে। তার একটা সংমিশ্রণ করে আইএফএ চালাতে হয়। আমি আশা করব চাপ নিয়ে জয়দীপ আইএফএ চালাবে।”
▪জয়দীপের ইস্তফা প্রসঙ্গে▪
“পৃথিবীতে কেউ অপরিহার্য নয়। আমিও না, তুমিও না, জয়দীপও না। সবার শূন‍্যস্থান ফিলাপ হবে। আশা করব, জয়দীপ ঠান্ডা মাথায় ডিল করবে।”

এখন প্রশ্ন হল, দেবব্রত সরকারের চ‍্যালেঞ্জ নিতে পারবেন “বিদ্রোহী” সচির জয়দীপ? সাংবাদিক সম্মেলন করে ইস্টবেঙ্গলের দেবব্রত সরকারের যুক্তি খন্ডন করার সাহস আছে জয়দীপের? তিনি তো রবিবার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, তার কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। যে স্বপ্ন নিয়ে আইএফএতে কাজ করতে এসেছিলেন তা করতে পারছেন না। তাই চলে যাচ্ছেন। আরও অবাক করার বিষয় হল যে, কার জন‍্য সচিব পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তার নাম উল্লেখ করেননি। “বিদ্রোহী” সচিবের প্রতিবাদের কোনও ভাষা নেই। এ কেমন প্রতিবাদ? সঠিকভাবে প্রতিবাদ করার তার সাহসই নেই। কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, অন রেকর্ড সেটাই বলতে পারলেন না। তাহলে এই প্রতিবাদকে কিসের জন‍্য সেলাম করব? বিশ্বে এই প্রথম কোনও ভাষাহীন প্রতিবাদ দেখা গেল। গতকাল (রবিবার) “ইনসাইড স্পোর্টস”-এ “সচিব হিসেবে ব‍্যক্তিত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে সরে দাঁড়ালেন জয়দীপ” প্রতিবেদনটি প্রকাশ হতেই এআইএফএফের সিনিয়র প্রেসিডেন্ট ও আইএফএ-র চেয়ারম‍্যান সুব্রত দত্ত সরাসরি পোস্ট করে জয়দীপের পক্ষেই কথা বলেছেন, তার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। সুব্রতবাবু অভিভাবক। অভিভাবকের মতোই দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি প্রকৃত নেতার মতোই পাশে থেকেছেন। পালিয়ে যাননি। নীরব থাকেননি। বিশ্বনাথ দত্ত, প্রদ‍্যোৎ দত্তরাও এভাবেই জুনিয়র কর্মকর্তার পাশে থাকতেন। প্রত‍্যাশা মতোই ‘গুরু’ সুব্রত দত্ত তাঁর ‘শিষ‍্য’-র পাশেই দাঁড়ালেন। এবার “গুরু”-র সেই প্রশংসা, পাশে থাকার মর্যাদা দেখান “বিদ্রোহী” সচিব।

তবু প্রশ্ন উঠছেই। ময়দানে আমরা বহু কেলেঙ্কারি দেখেছি, শুনেছি। কিন্তু এবারের আইএফএ-ইস্টবেঙ্গল নিয়ে অবাক করা ঘটনা। সচিব নিজেই ফোন করে ম‍্যাচ খেলার অনুরোধ করছেন। পরে সেই সচিবই বিদ্রোহ করলেন। “এ তুমি কেমন সচিব, খেলতে বলেও বিদ্রোহ করো……”

জয়দীপের প্রতিক্রিয়া জানতে রবিবার রাতে দুইবার এবং আজ, সোমবার সকালে একবার জয়দীপ মুখার্জিকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। “বিদ্রোহী” সচিবের প্রতিক্রিয়া পেলেই আমরা তা তুলে ধরব। এবার খোলসা করে বলার সময় এসেছে জয়দীপের। আত্মবিশ্বাস নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত সরকার যে চ‍্যালেঞ্জ আপনার দিকে ছুঁড়ে দিয়েছেন তা খন্ডন করুন। ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে গিয়ে বদ্ধঘরে কি বললেন, কি শুনলেন সেটার থেকেও সবাই বেশি করে সত‍্যিটা জানতে চায়। এবার খোলসা করে বলুন। জয়দীপ, আপনি যদি নীরব থাকেন তাহলে বাংলার ফুটবল সংসারের প্রতিটি সদস‍্য মেনে নেবেন যে দেবব্রত সরকারের দাবিই ঠিক। আপনি এক ঠুনকো “বিদ্রোহী” সচিব হয়েই থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here