ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন,কলকাতা, ১৩ আগস্ট : ১৯৮০ সালের ১৬ আগস্ট ইডেন গার্ডেন্সে ঘটে গিয়েছিল মর্মান্তিক ঘটনা। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের বিদেশ বসু ও দিলীপ এর ফাউলকে কেন্দ্র করে সেদিন ইডেনের গ্যালারিতে ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তেজনা, হিংসা। আর তা থেকেই মৃত্যু হয়েছিল ১৬ জন ফুটবল সমর্থকের মৃত্যু। তারপর থেকেই গত ৪০ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থা আইএফএ “ফুটবল প্রেমি দিবস” পালন করে থাকে। এবার সেটাই বদলে যাচ্ছে। এবার ওই দিনে সারা রাজ্যে পালিত হবে “খেলা হবে দিবস।”
গত ২ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নতুন “খেলা হবে দিবস” ঘোষণা করেছিলেন। আর আজ, শুক্রবার সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ে “খেলা হবে দিবস” নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে গিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। “ফুটবল প্রেমি দিবস” এর পরিবর্তে “খেলা হবে দিবস” কি কোনও রাজনৈতিক রং লেগে গেল না? এটা কি রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাইছেন? অরূপ বিশ্বাস প্রশ্নকর্তাকে বলে ওঠেন,”কোনও মানুষই রাজনীতির উর্ধ্বে নয়। আপনিও মনে হয় কোনও দলের হয়ে প্রশ্ন করছেন। আমার পরিস্কার বক্তব্য, সারা ভারতবর্ষ জুড়ে “খেলা হবে দিবস” পালন করা হবে। সেই “খেলা হবে দিবস”-এর নেতৃত্ব দেবেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
এই প্রশ্নের উত্তর শেষ হতেই সাংবাদিক সম্মেলনে ফের ১৬ আগস্ট নিয়ে প্রশ্ন উঠে আসে। ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট কলকাতা শহরে ঘটে গিয়েছিল দাঙ্গা। মৃত্যু হয়েছিল বহু মানুষের। এই দিনটাতে কেন “খেলা হবে দিবস” পালন হবে? এই প্রশ্ন তুলে আজ কিছু সন্ন্যাসী তারিখ বদলের দাবি করেন রাজ্যপালের কাছে। আপনি কি বলবেন?
উত্তরে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান,”এত বিতর্কের মধ্যে যেতে চাই না। ক্রীড়া দফতরের লক্ষ্য ক্রীড়ার উন্নয়ন। মুখ্যমন্ত্রী সেটাই করছেন। আর “ফুটবল প্রেমি দিবস”ও হবে। সেটা মেনেই তো এবারও নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রক্তদান হবে। আইএফএ, বিওএ, সিএবি – সবাইকে নিয়েই ক্রীড়ামন্ত্রক বাংলার খেলাধূলাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
ক্রীড়ামন্ত্রী জানান, এই “খেলা হবে দিবস” -এ বিশেষ আকর্ষণ হল ভারতীয় ফুটবল দল ও বাংলা ফুটবল দলের মধ্যে এক ঘন্টার প্রদর্শণী ম্যাচ হবে যুবভারতীতে। মন্ত্রীর দাবি, সুনীল ছেত্রী ছাড়া ভারতের সব ফুটবলাররাই এই ম্যাচে খেলবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৪ অগাস্ট থেকে ২৯ অগাস্ট কলকাতায় শিবির শুরু হচ্ছে ভারতীয় ফুটবল দলের। আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখার্জি জানান,” আমরা বাংলার প্রত্যেক ফুটবলারকে ডাবল ডোজ ভ্যাকসিন দিয়েই মাঠে নামাবো। তাছাড়া প্রত্যেকের কোভিড পরীক্ষাও করা হবে।” এআইএফএফের সহসভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন,”আমরা ফুটবলারদের উপর যত্নশীল। জাতীয় শিবিরে থাকা ফুটবলারদের উপর ফেডারেশন সতর্ক থাকবে। সব কিছু নিয়ম মেনেই খেলা হবে।”
এদিকে, ক্রীড়ামন্ত্রী জানান, মোট ৩৪৩ টি ব্লক, ১১৭ টি পুরসভা, ১৪৪টি ওয়ার্ড (কলকাত, ৬ টি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এবং ২৩ টি জেলা সদরে এই “খেলা হবে দিবস” পালন করা হবে।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অরূপ বিশ্বাস ও মনোজ তিওয়ারি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত ব্যানার্জি, চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত এবং সচিব জয়দীপ মুখার্জি।