ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন, ২৭ এপ্রিল : সুনামির মতো গোটা দেশে আছড়ে পড়ছে করোনা রোগ। প্রত্যেক দিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। হাসপাতালে বেড নেই। অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। বিনা চিকিৎসায় ঘরে, বাইরে মৃত্যু হচ্ছে মানুষের। দেশের এই জাতীয় বিপর্যয়ের সময় কেন আইপিএলের খেলা চলবে? এমন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বাড়িতে যেখানে সবাই মৃত্যুর আশঙ্কা করছে সেখানে ক্রিকেটের এই বিনোদন চালু রাখাটা কতটা যুক্তিযুক্ত?
যারা আইপিএল খেলছে তাদের মধ্যে বেশ কিছু ক্রিকেটার বিরক্ত, হতাশ। দিল্লি ক্যাপিটালসের মুখ রবিচন্দ্রণ অশ্বিন জানিয়ে দিয়েছেন করোনার জন্যই তিনি আইপিএল থেকে সরে যাচ্ছেন। অশ্বিনের সঙ্গে তিন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু টাই (রাজস্থান রয়ালস), কেন রিচার্ডসন ও অ্যাডাম জাম্পা (বেঙ্গালুরু) আইপিএল থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। হরভজন টুইট করে প্রশ্ন তুলেছেন,”সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। কারও কি কোনও মাথা ব্যাথা আছে?”
বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি ও সচিব জয় শাহ কি চাইছেন? আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজি দলের মালিকরাই বা কেন চুপ করে আছেন? শুধু মুনাফার জন্য জাতীয় বিপর্যয়ের সময়ও আইপিএল চালিয়ে যাওয়াকে সমর্থন করবেন তাঁরা? সিএবির এক কর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলছিলেন, এই আইপিএল থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। এই করোনা আবোহে আইপিএল চালানোটাও যেমন খারাপ আবার বন্ধ করলে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি। সেই কর্তাটি বললেন, সবে মাত্র চার ক্রিকেটার সরে গিয়েছেন। আগামী কয়েক দিনে যদি বিদেশি ক্রিকেটাররা দেশে ফিরে যায় তাহলে আইপিএল চালানোটাই সমস্যা হবে বোর্ডের।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের একটি সূত্র সোমবার জানিয়েছে, আইপিএল চলবে। সূত্রের খবর, সৌরভ গাঙ্গুলি নিজেও বুঝতে পারছেন, এই সময় আইপিএল চালিয়ে যাওয়াটা খুব সমস্যার হবে। তাছাড়া দেশের একটা বড় অংশ আইপিএল চালু রাখার জন্য সমালোচনা শুরু করেছে। এই অবস্থায় সৌরভ ও জয় শা কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের দিকে তাকিয়ে আছে। বোর্ড সরাসরি আইপিএল বন্ধ করে দিলে টিভি চ্যানেল, স্পনসর থেকে ফ্রাঞ্চাইজি দলের কর্ণধাররা প্রতিবাদ করতে পারে। কারণ বন্ধ হলে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হবে। তাই আইপিএল নিয়ে কেন্দ্র সরকার কি সংকেত দিচ্ছে তার অপেক্ষায় বোর্ড। জয় শা হলেন অমিত শা’র ছেলে। সৌরভের সঙ্গেও নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শা’র খুব ভাল সম্পর্ক। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার সম্ভাবনাই বেশি। তবে তার আগে দেশের করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে বোর্ড।
এদিকে, এই করোনার জন্যই টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব হারাতে চলেছে ভারত। আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ভারতে আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতে করোনা যা ভয়াবহ আকার ধারন করেছে তাই নিয়ে বিকল্প ভেন্যুর ভাবনা শুরু করে দিয়েছে। আইসিসি নাকি আমিরশাহী ও শ্রীলঙ্কাকে টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য আগাম জানিয়ে রেখেছে। এক্ষেত্রে আইসিসির প্রথম পছন্দ হল আমিরশাহী।