ইনসাইড স্পোর্টসের প্রতিবেদন : একদিকে করোনার অতিমারির ভয়ঙ্কর রূপ আবার অন্য দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর তান্ডবে বহু মানুষ আজ খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে। মাথার উপরে ছাদ নেই। পেটে ভাত নেই। আবার করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য যে টিকার প্রয়োজন তাও পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ আজ বড় অসহায়। এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলার ক্রীড়া মহল। বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন, সংস্থা, খেলোয়াড় আজ সবাই মানুষের পাশে।

বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি ইতিমধ্যেই অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আগামী ১৩ জুন নিজের অফিসে কলকাতার দুস্থদের বিনা মূল্যে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। প্রাক্তন রনজি ক্রিকেটার শিবশঙ্কর পাল সহ বেশ কিছু বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার সুন্দরবনে গিয়ে ‘ইয়াস’ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের হাতে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিয়ে এসেছেন। শিবশঙ্করদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সিএবির
সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া। তিনিই প্রথম’ইয়াস’-থেকে রক্ষা করার জন্য দুইদিন ময়দানের সমস্ত মালি,কর্মীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন।

ময়দানের বিভিন্ন ক্লাবের মালিদের দফায় দফায় খাবার তুলে দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা। আবার আইএফএ, কালীঘাট এমএস, সাদার্ন সমিতি যৌথ উদ্যোগে বিনামূল্যে টিকা দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
কলকাতা লিগের প্রিমিয়ারের দল বেহালার বিএসএস স্পোর্টিং ক্লাবের কর্তারা ফুটবলার থেকে সমাজের সকল স্তরের অসহায় মানুষদের এখনও সাহায্য করে চলেছেন। সম্প্রতি করোনায় মৃত্যু হয় ফুটবলার অরিন্দম হাজরার। শুক্রবার প্রয়াত অরিন্দমের পরিবারের হাতে ৩০ হাজার টাকা তুলে দিয়ে এসেছেন বিএসএস স্পোর্টিংয়ের কর্তারা। শুধু তাই নয় এই বিএসএস ক্লাব গত ২২ মে থেকে বেহালার বিভিন্ন এলাকার করোনা আক্রান্তর কাছে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, ঔষুধ, খাবার পৌঁছে দিচ্ছে।

বিএসএস ক্লাবের সচিব সন্দীপন ব্যানার্জি নিজে করোনায় আক্রান্ত। গত ২৫ দিন ধরে বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। এই অবস্থায় অসহায় মানুষের কাছে পরিষেবা কিভাবে পৌঁছনো যায় সেটাও তদারকি করছেন। “আমাদের ২০ জনের টিম আছে। শুধু করোনা আক্রান্তদের পরিষেবা দেওয়াই নয়, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদেরও পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা বিএসএস করছে। নিমপীঠ আশ্রমের সহায়তায় বিভিন্ন গ্রামে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।” বলছিলেন বিএসএস স্পোর্টিংয়ের সচিব সন্দীপনবাবু।
কিছুদিন আগে ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার দেবজিৎ ঘোষও অসহায় মানুষদের খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গলের আর এক প্রাক্তন ফুটবলার রূপক চৌধুরী নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “হরিনাভি সৃজন” ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে গিয়েছে সুন্দরবনের সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা রানীপুর ও উত্তরডাঙ্গায়। আজ,শনিবার থেকে রানীপুরের মানুষদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার রূপক চৌধুরী।

বেহালার শৈলেন মান্না ফুটবল অ্যাকাডেমিও আজ সাহায্য নিয়ে পথে নেমেছে। মূলত এই অ্যাকাডেমির সচিব গৌতম দাসের উদ্যোগে অনাথ ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের সাহায্য করা হয়েছে। এছাড়াও গৌতমবাবুর আর একটি ক্লাব সম্মিলনী অরবিন্দর উদ্যোগে অক্সিজেন পার্লারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টা পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে।
এই কঠিন সময়ে বাংলার ক্রীড়া জগতের অনেকেই এগিয়ে আসছেন। কিন্তু আটের দশকের তারকা ফুটবলার বা ক্রিকেটারদের দেখা যাচ্ছে না।